পাঁচ বছরে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের সাত হাজার চারশর বেশি নির্বাচন করে বিদায়ের অপেক্ষায় থাকা কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কাছে আরও তিন নির্বাচনের তারিখ চাইছে ইসি সচিবালয়।
Published : 19 Jan 2017, 08:54 AM
শুরু থেকে সমালোচনায় থাকা এই কমিশন নারায়ণগঞ্জের ‘সফলতা’ নিয়ে বিদায়ের আগে একেবারে শেষ সময়ে আর নতুন নির্বাচনে হাত দিতে আগ্রহী নয়। তবে নির্ধারিত সময়ে ভোটের বাধ্যবাধকতা থাকায় দুটি সংসদীয় আসনে উপ নির্বাচন ও একটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল চাওয়া হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসবে। বিদায়ী ইসি ভোটের তারিখ দিয়ে গেলে অসুবিধা হবে না; নতুন ইসি এসে ভোট করবেন।”
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সিইসি কাজী রকিব ও তিন নির্বাচন কমিশনার এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি আরেক নির্বাচন কমিশনারের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। তারা তফসিল দিলে নতুন কমিশনকে এসেই ওই ভোট আয়োজন করতে হবে।
ইসি সচিব বলেন, “বর্তমান কমিশন বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের পর আর কোনো নির্বাচন তারা করতে চাইছেন না।”
তবে এরইমধ্যে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভার তফসিল হয়েছে, যার ভোট হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ঝুলে থাকা টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ নির্বাচনের বাধাও বুধবার কেটে গেল। উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর আপিল বুধবার খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
এছাড়া গতমাসে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের গাইবান্ধা-১ শূন্য আসনের উপ নির্বাচনও মার্চের মধ্যে করতে হবে।
“এসব নির্বাচনের সময় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নতুন ইসি এসে তফসিল করতে ভোটের জন্য ৪০-৪৫ দিনের মতো পর্যাপ্ত সময় পাওয়া মুশকিল হবে। সেক্ষেত্রে বিদায়ী ইসিকে তফসিল দেওয়ার প্রস্তাব আমাদের। সম্ভবত তারিখ দিয়ে যাবেন বিদায়ী ইসি, ভোট করবেন নতুন ইসি,” বলেন ইসি সচিব।
‘শিগগিরই’ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা প্রকাশ করে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরব। কমিশন চাইলে তফসিল দেবেন। তা না হলে পরবর্তী কমিশন তফসিল দেবে।”
নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী সাংবাদিকদের জানান, গাইবান্ধা-১ আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট সংসদ সচিবালয় থেকে কমিশনে পৌঁছেছে। সংবিধান অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে এ আসনে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
“আমরা দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। উপ-নির্বাচন আগামী কমিশনের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা এ নির্বাচন করতে পারবেন কি না তা বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
কাজী রকিব কমিশনের যত নির্বাচন
নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার সহকারী সচিব রাজীব আহসান ও আশফাকুর রহমান জানান, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ বছরে জাতীয় সংসদ, সংরক্ষিত মহিলা আসন, উপ নির্বাচন, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও মহিলা সদস্য, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাত হাজার ৪০৯টি নির্বাচন করেছে কাজী রকিব নেতৃত্বাধীন ইসি।
এরমধ্যে জেলা পরিষদ ও উপজেলার সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ভোট প্রথম আয়োজন করল এ কমিশন।
>>রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০১৩
নবম জাতীয় সংসদের শূন্য আসনের উপ-নির্বাচন ৭টি
>>দশম সংসদ সাধারণ নির্বাচন ৩০০ আসন
দশম সংসদের শূন্য আসনে উপ-নির্বাচন ৯টি
দশম সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন- ৫০ আসন
>>সিটি করপোরেশন সাধারণ নির্বাচন ১০টি
সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচন ৭টি
>>পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন ২৮৪টি
পৌরসভা উপ নির্বাচন ৯৫টি
>>প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচন – ৬১ টি
>>উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন ৪৮৭টি
উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচন ১০টি
>>উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন ৪৭০টি
>>ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন ৪২৯৪টি
ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচন ১৩৭৩টি