একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত প্রয়াত রেজাউল করিমের ভাই ড. রফিকুল ইসলামই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদের ডিন পুনর্নির্বাচনে নীল দলের প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন।
Published : 09 Jan 2017, 12:32 AM
আগেরদিন আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের বৈঠকে ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রফিকুলকে প্রার্থী করতে আপত্তি উঠলে প্রস্তাবটি নীল দলের সংশ্লিষ্ট অনুষদের ফোরামে ফেরত পাঠানো হয়।
তবে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের নীল দলের সদস্যদের বৈঠকে তাকেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয় বলে অধ্যাপক মশিউর রহমান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপক রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে ডিন নির্বাচনের জন্য আবার বাছাই করা হয়েছে। একজন সিনিয়র শিক্ষক জানিয়েছেন যে, তার পরিবর্তে শিক্ষকরা চারজন শিক্ষককে ডিন নির্বাচনের জন্য বিকল্প হিসেবে দিয়েছিলেন এবং তার বিরোধিতা করেছিলেন।
“কিন্তু অনুষদভুক্ত নীল দলের শিক্ষকদের একটি মহল তার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে, তারা তাকে বেছে নিয়েছে।”
নীল দলের সমর্থন নিয়েই তিন বছর আগে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হয়েছিলেন অধ্যাপক রফিকুল।
তার ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেজাউলের বিরুদ্ধে একাত্তরে মাগুরায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে বলে জানতে পারার পর এবার তাকে ওই পদে প্রার্থী করায় আপত্তি তুলেছিলেন নীল দলের একাংশ।
নীল দলের সদস্য ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাগুরায় রিজু নামে পরিচিত রেজাউল করিম যুদ্ধাপরাধ করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি পালিয়ে চট্টগ্রামে গিয়ে রেজাউল করিম মামুন নাম নেন।”
রেজাউলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের কথা জানার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তিনি হাই কোর্টে গিয়ে তাতে স্থগিতাদেশ পান।
বরখাস্তের বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার মৃত্যু হয়। প্রতিবাদের মুখে গ্রামের বাড়িতে তার দাফন হয়নি, ফেনীতে নিয়ে তাকে দাফন করা হয়।
শনিবারের বৈঠকের পর অধ্যাপক মশিউর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “নীল দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে, বাহাত্তরের সংবিধানের ভিত্তিতে অসাম্প্রদায়িক আদর্শে বিশ্বাস করে।
“প্রধানমন্ত্রী যেখানে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন, সেই সময় তাদের কারও পরিবারের সদস্যকে নীল দলের পক্ষ থেকে ডিন প্রস্তাব করা হবে- এটাতো হতে পারে না।”