বিনা বিচারে দেড় দশক ধরে কারাগারে থাকা চাঁন মিয়া, মকবুল, সেন্টু ও বিল্লালকে আগামী ৪ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 20 Nov 2016, 02:51 PM
এই চারজনকে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার স্ব-প্রণোদিত এই আদেশ দেয়।
বিনাবিচারে কারাগারে থাকা এই চারজনকে নিয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন কুমার দেবুল দে নামের এক আইনজীবী আদালতের নজরে আনেন।
কুমার দেবুল দে পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই চারজন ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে কারাগারে আছেন। প্রতিবেদনটি নজরে আনলে আদালত চারজনের জন্য পৃথক রুল জারি করেন।
আগামী ৪ ডিসেম্বর বিষয়টি আবারও শুনানির জন্য আসবে। ওইদিন নিম্ন আদালতের নথি হাই কোর্টে উপস্থাপন করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে এ আইনজীবী জানান।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চাঁন মিয়া দেড় যুগ ধরে বিনা বিচারে কাশিমপুর কারাগারে আছেন।
ঢাকার শ্যামপুর থানার একটি হত্যা মামলায় ১৯৯৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি আর জামিন পাননি। ঢাকার পরিবেশ আদালতে বিচারাধীন এ মামলারও কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
মাদারীপুরের মকবুল হোসেন রাজধানীর উত্তরা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন ২০০০ সালে। এরপর ১৬ বছরে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন হয়নি। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মকবুলের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে কোনো আইনজীবীও ছিল না।
মতিঝিলের এজিবি কলোনির সেন্টু কামাল গ্রেপ্তার হন ২০০১ সালে। সর্বশেষ গত মাসেও তাকে হাজির করা হয়েছিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে। গত ১৫ বছরে ৫৯ কার্যদিবস তাকে আদালতে হাজির করা হলেও মামলার বিচার শেষ হয়নি।
মামলা শেষ হয়নি কুমিল্লার বিল্লাল হোসেনেরও। তেজগাঁও থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় ২০০২ সালে গ্রেপ্তার হওয়া বিল্লাল আছেন কাশিমপুর কারাগারে। তার মামলাও ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
বিষয়টি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন আইনজীবী কুমার দেবুল দে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম জহিরুল হক।
রাজধানীর সূত্রাপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিনা বিচারে ১৭ বছর কারাভোগের পর শিপন নামের এক আসামিকে সম্প্রতি জামিন দেয় হাই কোর্ট।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও জেবিএম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৮ নভেম্বর বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করলে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেয়।
শিপনকে নিয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের একটি প্রতিবেদন আইনজীবী কুমার দেবুল দেই আদালতের নজরে এনেছিলেন।