নয় ঘণ্টার ধর্মঘটে কমিশন বৃদ্ধি ও ইজারা মাশুল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১২ দাবি আদায় না হওয়ায় এবার সরকারকে ১০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিকরা।
Published : 19 Oct 2016, 01:38 PM
এ সময়ের মধ্যে দাবিগুলো মানা না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে দেশের সব পেট্রোল পাম্পে লাগাতার ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, “আগামী দশ দিনের মধ্যে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতিসহ ১২ দাবি পূরণের দাবি জানাচ্ছি।
“তা না হলে আগামী ৩০ অক্টোবর রোববার সকাল ৬টা থেকে দেশের সব পেট্রোল পাম্পে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলবে।”
“আমাদের অনেক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট চলবে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, দাবি দাওয়া পূরণের বিষয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে মন্ত্রণালয়ে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। একাধিকবার ধর্মঘট করলেও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। বরং বিভিন্ন সময় তাদেরকে অপমান করা হয়েছে।
“মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আমাদেরকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন। এটি আমাদের ব্যথিত ও হতাশ করেছে।”
এ ধরনের ধর্মঘটে জনগণের ভোগান্তি হলেও দাবি আদায়ে এটা করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রিতে ১ টাকা ৬৯ পয়সা কমিশন পাচ্ছেন পাম্প মালিকরা। এ কমিশন ৩ টাকা করার দাবি তাদের।
এছাড়া বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ও পেট্রোলে ৩ টাকা ৪৯ পয়সা কমিশন বাড়িয়ে ৫ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
মালিকরা অভিযোগ করেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে প্রতি লিটার ডিজেলে ২টাকা ১৪ পয়সা এবং পেট্রোল ও অকটেনে ৩ টাকা ৮০ পয়সা কমিশন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সেটাও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
গত ২০ আগস্ট ঐক্য পরিষদের এক ঘোষণায় ১২ দফা দাবি আদায়ে ২৮ অগাস্ট সারাদেশে পেট্রোল পাম্পে সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালিত হয়।
সেদিন রাজধানীসহ দেশের ৫ হাজার ৬০০টি পাম্পে নয় ঘণ্টা জ্বালানি তেল বিক্রি, ট্যাংক লরির মাধ্যমে তেল উত্তোলন, পরিবহন এবং বিপণন বন্ধ থাকে।
ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণার দিন সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা অভিযোগ করেছিলেন, তিন মাসের মধ্যে কমিশন বৃদ্ধিসহ নানা দাবি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ছয় বছরেও তা মানা হয়নি। সম্প্রতি ১২ দফা দাবি আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে তিনবার চিঠি পাঠিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
তাদের দাবি, গত কয়েক বছরে পেট্রোল পাম্প পরিচালনায় ব্যয় কয়েকগুণ বাড়লেও কমিশন বাড়ানো হয়নি। ২০১১ সালের হিসেবেই পাম্প মালিকদের কমিশন দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় কমিশন না বাড়লে পাম্প চালানো সম্ভব নয়।
সড়ক-মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের জমি সংযোগ সড়ক হিসেবে ইজারা নিয়ে গড়ে উঠেছে অনেক পেট্রোল পাম্প।
সওজের পক্ষ থেকে কয়েকবছর পরপর জমির ইজারা মাশুল বাড়ানো হচ্ছে বলে একে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেনও নেতারা।