বঙ্গবাহাদুরের মৃত‌্যু ‘যকৃতে পানি জমে’

ভারত থেকে আসা আলোচিত হাতি ‘বঙ্গবাহাদুর’ যকৃতে পানি জমার কারণে মারা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ শফিউল আলম চৌধুরী।

মঈনুল হক চৌধুরীও সাজিদুল হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2016, 12:41 PM
Updated : 29 Sept 2016, 12:43 PM

সংসদীয় কমিটির কাছে এ কর্মকর্তা বলেছেন, “হাতিকে বাঁচাতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। লিভারে পানি জমে যাওয়ার কারণে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।”

বানের জলে ভারত থেকে ভেসে এসে দেড় মাস ধরে আলোচনায় থাকা হাতিটির মৃত‌্যুর কারণ হিসেবে এর আগে হৃদরোগকে চিহ্নিত করেছিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা।

অচেতন করে গত ১১ অগাস্ট জামালপুরের হাতিটি বাগে আনার পর পাঁচ দিন পর মারা যায় বঙ্গবাহাদুর।

এর দুইসপ্তাহ পর পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে বন অধিদপ্তরের উপ প্রধান বন সংরক্ষক হাতিটির মৃত্যুর কারণটি তুলে ধরেন।

বানের জলে ভেসে গত ২৬ জুন ভারতের আসাম হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম সীমান্তে এসেছিল বুনো হাতিটি।

এরপর কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হাতিটি ছিল ৯ জুলাই পর্যন্ত। ১০ থেকে ১৩ জুলাই গাইবান্ধায়, ১৪-১৬ জুলাই জামালপুরে, ১৭-১৮ জুলাই বগুড়ায়, ১৯-৩০ জুলাই সিরাজগঞ্জে এবং তারপর ৩১ জুলাই থেকে আবার জামালপুরে চষে বেড়ায় এটি।

৩ অগাস্ট ভারতীয় একটি দল এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগালেও ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়।

হাতিটি চষে বেড়ায় ৫ জেলায়

এখানেই মারা গিয়েছিল হাতিটি

দেড় মাসের বেশি সময় ধরে নদী ও স্থলপথ মিলিয়ে চার জেলার কয়েকশ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে অনেকটা দুর্বল হয়ে জামালপুরের সরিষাবাড়ির কয়রা এলাকায় ‘ট্রাংকুলাইজ’ করার পর ধরা পড়েছিল হাতিটি।

হাতিটির ময়নাতদন্ত দলের প্রধান কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “তাপদাহে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবাহাদুর মারা গেছে।”

এর দুই সপ্তাহ পর ৩০ অগাস্ট পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপ-প্রধান বন সংরক্ষক হাতির মৃত‌্যুর ভিন্ন কারণ জানান।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এর অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে রয়েছে।

বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ৩০ অগাস্টের বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুমোদন পায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শফিউল আলম।

ওই বৈঠকে কমিটির সভাপতি হাছান মাহমুদ বুনো হাতিটি মারা যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে শফিউল লিভারে পানি জমার কথা জানান।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে কথা বলতে ফোন করা হলে শফিউল আলম ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত’ রয়েছেন বলে জানান।

হাতিটি উদ্ধারকাজের তদারকিতে থাকা সাবেক উপ-প্রধান বন সংরক্ষক তপন কুমার দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাতিটির মৃত্যুর বিষয়ে ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদন বন অধিদপ্তরের কাছে রয়েছে। তারাই বিষয়টি বলতে পারবে।”