সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠাগুলোতে তথ্য দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলাকে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ উল্লেখ করে তা মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
Published : 28 Sep 2016, 06:35 PM
আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে র্দীর্ঘকাল থেকেই গোপনীয়তার একটি সংস্কৃতি চলে আসছে। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ দাপ্তরিক গোপনীয়তার আইনে দীক্ষিত।
“অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ ধারণা করেন যে, প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা, অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির খবর সাধারণ জনগণ জানতে পারলে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাই সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে তথ্য প্রদানের সংস্কৃতি গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশ ও জনগণের কল্যাণে আমাদেরকে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।”
তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলোও অনুষ্ঠানে স্মরণ করিয়ে দেন রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ।
এগুলো হল- সাধারণ জনগণের মধ্যে তথ্য অধিকার আইন বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগ, তথ্যকে ক্যাটালগ ও ইনডেক্স অনুযায়ী সংরক্ষণ, স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে তথ্য প্রদানের মানসিকতা সৃষ্টি করা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ এবং তাকে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধকরণ ও সহায়তা দান, তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা।
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার আদায়ে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, তা আদায় করে নিতে হয়। তাই তথ্য প্রাপ্তিতে জনগণকে তাদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হতে হবে।”
তথ্য অধিকার আইনের সফল বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্য জানা আর না জানা অনেকটা আলো-আঁধারের মতো। আলো যেমন মানুষকে কল্যাণ ও মঙ্গলের পথ দেখায়, তেমনি তথ্য মানুষকে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমাজ থেকে দুর্নীতি ও অনাচার দূর করার পথ দেখায়। পক্ষান্তরে আঁধার মানুষকে অমঙ্গলের পথে নিয়ে যায় এবং তথ্যের অপর্যাপ্ততা সমাজে দুর্নীতির প্রসার ঘটায়।
আবদুল হামিদ আরও বলেন, “তথ্যের অবাধ প্রবাহ গণতন্ত্র ও সুশাসনের চালিকাশক্তি। তথ্যের প্রবাহের সাথে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। যে কোনো রাষ্ট্রে তথ্য যত সহজলভ্য, তার উন্নয়নের মানও ততো বেশি। অন্যদিকে দুর্নীতির সাথে অনুন্নয়নের যোগসূত্র রয়েছে। জনকল্যাণে তথ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রযন্ত্রে দুর্নীতির মাত্রাকেও ক্রমান্নয়ে হ্রাস করে। এর ফলে সাধারণ জনগণই সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়।”
এসময় ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত’ করতে তথ্য কমিশনকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দিতে সরকারের প্রতিও আহ্বান তিনি।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তথ্য কমিশন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ, তথ্য কমিশনার খুরশীদা বেগম সাঈদ, তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহিন আনাম । অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য কমিশনার নেপাল চন্দ্র সরকার।