উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে দেওয়া আলোচিত রায়ের তৃতীয় বিচারপতির অংশও প্রকাশিত হয়েছে।
Published : 08 Sep 2016, 03:31 PM
জাতীয় সংসদ কর্তৃক সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতার পক্ষে মতপ্রকাশ করে দেওয়া বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের রায়ের অংশ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তোলা হয়।
চলতি বছরের ৫ মে তিন বিচারপতির হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় আসে।
১৬৫ পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে তার সঙ্গে একমত পোষণ করছেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক।
১১ অগাস্ট ওই রায়ের ওই অংশ প্রকাশের প্রায় একমাস পর ষোড়শ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের ১২৫ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশিত হলো।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাই কোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে এর মধ্যে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৪ সালে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী গত মে মাসে হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণার রায়ের পর তা রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তাপ ছড়িয়েছিল, সংসদেও ওয়াকআউটও হয়েছিল।
উচ্চ আদালতের বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
অসদাচরণের জন্য উচ্চ আদালতের কোনো বিচারককে কীভাবে অপসারণ করা যাবে, সে প্রক্রিয়া নির্ধারণে আরেকটি আইনের খসড়ায় সম্প্রতি সম্মতি দেয় মন্ত্রিসভা।
ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৫ নভেম্বর হাই কোর্টে এই রিট আবেদন হয়। প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল দেয়। রুলে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
এই রুলের উপর গত বছর ২১ মে শুনানি শুরু হয়। ওই দিন আদালত মতামত দিতে অ্যামিচি কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ পাঁচ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি নিজেদের মত তুলে ধরেন।
রুলের শুনানি শেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৫ মে রায় হয়।