যুদ্ধাপরাধী জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদ জানিয়ে তুরস্ক সরকার ঢাকা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে আঙ্কারায় ফিরিয়ে নিয়েছে বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।
Published : 12 May 2016, 05:06 PM
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান নিজেই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানোর বিষয়টি জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওসতুর্ক ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি বৃহস্পতিবারই আঙ্কারায় ফিরতে পারেন বলে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাডলুর খবরে জানানো হয়েছে।
আঙ্কারার কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনাডলু লিখেছে, নিজামীর ফাঁসি পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য ঢাকা থেকে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানের মতো তুরস্কও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে আসছে।
বুধবার প্রথম প্রহরে ঢাকায় নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফাঁসির প্রতিবাদে তুরস্কে বিক্ষোভও হয়।
নিজামীর ফাঁসির খবরে ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, তার ‘এ ধরনের শাস্তি প্রাপ্য ছিল বলে’ তুরস্ক মনে করে না।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর ঠেকাতে গত তিন বছরে বার বার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, “তুরস্ক মনে করে, এ ধরনের পদ্ধতিতে অতীতের ক্ষত নিরাময় সম্ভব নয়, বরং তা আমাদের বাংলাদেশি ভাইদের মধ্যে ঘৃণা ও শত্রুতা আরও বাড়িয়ে দেবে।”
নিজামী ছিলেন একাত্তরে আল বদর বাহিনীর নেতা। এই বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নকশা বাস্তবায়ন করেছিল। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, নির্দেশদাতা হিসেবে দোষি সাব্যস্ত হন নিজামী।
নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট বুধবার একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করে।
সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের এই ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাটির’ প্রতি দৃষ্টি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করে পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ত্রুটিপূর্ণ বিচারে’ প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছে জামায়াত আমিরকে।
নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ক্ষোভ জানিয়ে পাকিস্তান জামায়াতের আমির সিরাজ-উল হক বলেছেন, “পাকিস্তানের প্রতি ভালোবাসার কারণেই তাকে (নিজামী) ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে।”