আলবদর বাহিনীর ‘প্রেরণাদাতা’, বুদ্ধিজীবি হত্যার ‘প্ররোচণাদানকারী’ জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম।
Published : 05 May 2016, 12:38 PM
বৃহস্পতিবার ওই রায়ের পর নিজের কার্যালয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এসে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, “এ রায়ে সারা জাতি স্বস্তি পাচ্ছে। পুরো জাতি স্বস্তি বোধ করছে। পুরো জাতির মতো আমরা আনন্দিত।”
একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে একাত্তরের বদর প্রধান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের যে রায় আপিল বিভাগ দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে দিলে এই যুদ্ধাপরাধ মামলার সব বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়ে গেছে। ডিসমিসড হয়ে গেছে।”
পরে নিজের কার্যালয়ে তিনি বলেন, “এই রায়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার দেশবাসী পেল। নিজামী ছিলেন আলবদর বাহিনীর অন্যতম প্রেরণাদাতা, তার প্ররোচণায় বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছে।”
জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।
তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল- এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়।
দণ্ড কার্যকরে অনুসরণীয় প্রক্রিয়া তুলে ধরে মাহবুবে আলম বলেন, ওই রায়ের অনুলিপি কারাগারে যাওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ জানতে চাইবে- নিজামী রাষ্ট্রপক্ষের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কিনা।
“যদি প্রাণভিক্ষা চান, তা রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করবে। না চাইলে দণ্ড কার্যকর হবে। সরকার দিনক্ষণ নির্ধারণ করে দণ্ড কার্যকর করবে।”
আপিল বিভাগ গত ৬ জানুয়ারি নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করে। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া প্রাণদণ্ডের সাজাই তাতে বহাল থাকে।
সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রী নিজামী এখন রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।
তিনি হলেন পঞ্চম যুদ্ধাপরাধী, যার সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকরের পর্যায়ে এসেছে।