শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে ৯০ বছর বয়সী সখিনা বেগমকে খবরটি দেওয়া হয়নি বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
নিহতের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাকে বলা হয়েছে, জুলহাজ অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি আছে। সুস্থ হলে বাড়ি ফিরে আসবে।”
ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজকে ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের বাড়িতে হত্যা করার সময় সখিনা বেগমও সেখানে ছিলেন। হামলাকারীরা তাকে ও গৃহকর্মীকে একটি কক্ষে আটকে রেখেছিল।
জুলহাজের ভাই বলেন, “সন্তানের বাড়ি ফেরার জন্য তিনি (সখিনা) অপেক্ষা করেন। জুলহাজ কখন বাড়ি ফিরবে, কেমন আছে জানতে চান।”
কলাবাগানের বাসা থেকে সখিনাকে নিজের বাসায় নিয়ে গেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সহসভাপতি মিনহাজ। এখন তিনি সেখানেই রয়েছেন। জুলহাজের বাবা আবদুল মান্নান সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন, এখন তিনি বেঁচে নেই।
সমকামী ও হিজড়াদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার জুলহাজের সঙ্গে তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কেও একই সঙ্গে কুপিয়ে হত্যা করা হয় কলাবাগানের ওই বাড়িতে।
জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি ভবনের সিসি ক্যামেরায় অন্তত পাঁচ যুবকের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়লেও তাদের শনাক্ত করে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
জুলহাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যে মামলা দুটি হয়েছে, তার তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
তদন্তে পুলিশ যোগাযোগ করছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে মিনহাজ বলেন, “ওই ঘটনার পর পুলিশ যোগাযোগ করেনি।”
“তবে মানুষ তো একটা আশা নিয়ে বাঁচে। আমরাও আশা করি, জুলহাজের খুনিরা ধরা পড়বে,” বলেন ভাইহারা মিনহাজ।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অ্যাসিসটেন্ট জুলহাজের খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়ে আসছে ওয়াশিংটন। বিশ্বের নানা দেশও উদ্বেগ জানিয়েছে।
হত এক বছরে জুলহাজের মতো হত্যা করা হয়েছে আরও অনেককে, যাতে জঙ্গিরা জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৩৭টি।
জুলহাজ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, মামলার তদন্ত চলছে।
“আপনারা জানেন, এমন টার্গেটেড কিলিং ও স্লিপার সেল কর্তৃক সংঘটিত ঘটনা পৃথিবীর যে কোনো দেশে, একেবারে সর্বাপেক্ষা উন্নত দেশেও সময় লাগে। আমরা চেষ্টা করছি।”