শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশ

মিয়ানমারে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2016, 02:05 PM
Updated : 3 Jan 2017, 09:55 AM

বুধবার রাত ৮টার ঠিক আগে রাজধানীতে থেকে থেকে কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বড় বড় ভবনগুলো দুলতে থাকলে আতঙ্কও দেখা যায়।

একই সময় চট্টগ্রামসহ অন্য জেলাগুলো থেকেও ভূকম্পনের খবর আসতে থাকে।

ভূমিকম্পে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ঢাকার মগবাজারে একটি মাদ্রাসার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সিলেটে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। 

চট্টগ্রামে কয়েকটি ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আর কোথাও ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা ছিল শক্তিশালী ভূমিকম্প। নিকট অতীতে আমাদের আশপাশে শুধু নেপালে এর চেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল।”

ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠের ‘বেশ গভীরে’ হওয়ায় বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ হুমায়ুন আখতার।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইউএসজিএসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৩৪ কিলোমিটার গভীরে।

তবে বাংলাদেশের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা হানিফ তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, “রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২।”

রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে অনুভূত এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ঢাকা থেকে ৪২০ কিলোমিটার পূর্বে বলে জানান তিনি।  

রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ উল্লেখ করা হয়। পরে অবশ্য তা ৬ দশমিক ৯ এ নামিয়ে আনা হয়। ভারতের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ সংস্থা মাত্রা উল্লেখ করেছে ৬ দশমিক ৮।

.

এসব তথ্য জানানোর পরও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২।”

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে স্থাপিত আর্থ-অবজারভেটরির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, “এর ম্যাগনিচ্যুড রিখটার স্কেলে মাত্রা ৬ দশমিক ৯ রেকর্ড করা হয়েছে।”

বিভিন্ন ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের বিশ্লেষণে ভূকম্পনের মাত্রার তারতম্য দশমিক ২ থেকে দশমিক ৩ পর্যন্ত কম-বেশি হতে পারে বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সফটওয়্যার এনালাইসিস বলছে ৭ দশমিক ২। অন্যরা কমও বলতে পারে।

“বিভিন্ন সেন্টারের এনালাইসিস বিভিন্ন হতে পারে। সেক্ষেত্রে দশমিক ২ থেকে দশমিক ৩ এর ভেরিয়েশন সমস্যা নয়।”

বুধবারের ভূমিকম্প ‘ফোর বোল’র উল্লেখ করেন মল্লিক বলেন, “মানে এটাকে শক্তিশালীর চেয়েও একটু বেশি বলা যায়।”