তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
Published : 29 Mar 2016, 11:06 PM
একক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা পড়ায় খোকসা, কালিগঞ্জ ও লৌহজং উপজেলার পাঁচ ইউপিতে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ নেই।
মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রত্যাহারের সময় পার হলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
এর আগে প্রথম ধাপে নৌকা প্রতীকের ৬২ জন ও দ্বিতীয় ধাপের ৩১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। তবে আদালতের আদেশে পাঁচ জনের নির্বাচিত ঘোষণার বিষয়টি আটকে আছে।
তৃতীয় ধাপের ইউপির মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ছিল রোববার; ২৩ এপ্রিল ৬২১ ইউপিতে ভোট হবে।
বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেও ব্যতিক্রম ঘটেছে রাঙামাটি ও বান্দরবানে।
এই দুই জেলার ৫৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি অভিযোগ করলে ভোট পিছিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার ইসির জনসংযোগ শাখার তথ্য মতে, তৃতীয় ধাপের ৬২১ ইউপিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুই হাজার ৮১৭ জন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের ৬২১ জন ও বিএনপির ৫৭৫ ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন।
এরমধ্যে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাট ও চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ী উপজেলার সুন্দরপুর ইউপিতে বিএনপির দুই জন করে প্রার্থী রয়েছে।
১৪টি দলের প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে চেয়ারম্যান পদে।
একক প্রার্থী ৫ ইউপিতে
কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়ীয়া, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের জামাল এবং মুন্সিগঞ্জের লৌহজঙ্গ উপজেলার বৈলতলী, গাওনদিয়া ও কুমারভোগ ইউপিতে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছে।
৪৮ ইউপি বিএনপিশূন্য
এর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা, কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়িয়া ও গোপগ্রাম, খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ির বারমাছড়ি, মহালছড়ির ক্যায়াংঘাট ও মুবাছড়ি, দীঘিনালার কাবাখালী, খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোনছড়া, গোলাবাড়ী, কমলছড়ি, পেরাছড়া, পানছড়ির লোগাং, গাইবান্ধা সদরের কামারজানি ও মোল্লারচর।
এছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ফুকরা, হাতিয়াড়া, কাশিয়ানী, মামুদপুর, নিজামকান্দি, ওড়াকান্দি, পারুলিয়া, পুইশুর, রাজপাট, শাজাইল ও সিংগা, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জাফতনগর, চাঁপাই নবাবগঞ্জের বারঘরিয়া, মহারাজপুর ও নারায়নপুর, ঝিনাইদহ কালিগঞ্জের জামাল, নারায়ণগঞ্জ সদরের আলারটেক ও কুতুবপুর, নীলফমারীর ডিমলার পশ্চিমছাতনাই ও পূর্বছাতনাই, নোয়াখালী চাটখিলের খিলপাড়া, নড়াইল সদরের মুলীয়া, বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমা, মুন্সিগঞ্জ লৌহজঙ্গের বৈলতলী, গাওনদিয়া ও কুমারভোগ, রাজবাড়ী গোয়ালন্দের উজানচর, বালিয়াকান্দির ইসলামপুর ও জংগল, রংপুর মিঠাপুকুরের দূর্গাপুর, লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ও মাদাতি এবং সিলেটের কানাইঘাটের সাতবাকে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই।
প্রথম ধাপে ১১৯ ইউপি ও দ্বিতীয় ধাপে ৭৯ ইউপিতে প্রার্থী ছিল না বিএনপির।
দলটির অভিযোগ ছিল, বাধা ও ভীতি প্রদর্শেনের কারণে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। এ কারণে নির্বাচনের তারিখ স্থানান্তর বা মনোনয়নপত্র গ্রহণের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল দলটি।
গত ১৫ মার্চ নির্বাচন কমিশন তৃতীয় ধাপে ৬৮৫টি ইউপির তফসিল ঘোষণা করে।
এর মধ্যে আইনগত জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে ১১ ইউপির নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। মঙ্গলবার ৫৩টির নির্বাচন পরিবর্তন করে ষষ্ঠ ধাপে নেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ-বিএনপিশূন্য
প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় তৃতীয় ধাপের রাঙামাটি জেলার ১০ উপজেলার ৪৯ ইউপির তফসিল পরিবর্তন করে ষষ্ঠ ধাপে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে এসব ইউপির ভোট পরবর্তী তফসিলে (জুনে অনুষ্ঠিত হবে) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে শতাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের অনেক ইউপির ভোটের তফসিল স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছিল বিএনপি। তবে তা আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, “কোন দল প্রার্থী দিতে পারলো কি পারলো না এটা আমাদের দেখার বিষয় না। এসব ইউপিতে পরে ভোট করলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ করা যাবে- এ সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে রাঙামাটির ইউপিগুলোর ভোট পেছানো হয়েছে।”
এবার ছয় ধাপে ইউপি নির্বাচন আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। সর্বশেষ ধাপের নির্বাচন হবে ৪ জুন।