বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার অন্যতম পুরোধা, পুঁথিবিশারদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া আর নেই।
Published : 24 Feb 2016, 01:29 PM
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত বুধবার দুপুরে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই সাবেক সচিব। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
তার ছেলে মারুফ শমসের যাকারিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ফুসফুস ও কিডনির জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তার বাবা। তিনি ডা. মামুনুর রশিদ ও ডা. কামরুল আলমের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
“গত কয়েকদিন ধরেই তার অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। মঙ্গলবার তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। আজ দুপুর ১২টার কিছু আগে ডাক্তাররা লাইফ সাপোর্ট খুলে নেন।”
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি যাকারিয়া প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে গবেষণার জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদক পান। তার আগে ২০০৬ সালে পান বাংলা একাডেমি পুরস্কার।
অসুস্থতার কারণে জীবনের শেষ তিনটি বছর তার কলাবাগানের লেক সার্কাসের বাসা ও হাসপাতালেই কেটেছে।
১৯১৮ সালের অক্টোবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া যাকারিয়া কর্মজীবনের শুরু করেছিলেন বগুড়া আজিজুল হক কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে।
১৯৪৭ সালে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং জেলা পর্যায়ে চাকরিতে থাকা অবস্থায় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা খনন ও তথ্য সংগ্রহে উদ্যোগী হন। তার উদ্যোগেই দিনাজপুরে সীতাকোট বিহারের খনন হয়। গুপিচন্দ্রের সন্যাস, গাজীকালু চম্পাবতীসহ বেশ কিছু পুঁথির সম্পাদনাও হয়েছে তার হাত দিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ডিগ্রি নেওয়া যাকারিয়া গবেষণা করেছেন মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য ও নবাবি আমলের ইতিহাস নিয়েও। ‘বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ’সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই লিখেছেন তিনি।
মারুফ শমসের যাকারিয়া জানান, বুধবার বিকালে লেক সার্কাস তেঁতুলতলা মাঠে তার বাবার জানাজার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার জোহরের পর বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামের বাড়িতে আবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।