খাদ্য নিরাপত্তায় নেদারল্যান্ডসের তিন প্রকল্প

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, বাজার ব্যবস্থাপনা ও কৃষি কাজে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে বাংলাদেশে তিনটি সহায়তা প্রকল্প শুরু করল নেদারল্যান্ডস।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 05:17 PM
Updated : 7 Feb 2016, 05:17 PM

রোববার ঢাকায় এক হোটেলে ১৫০ কোটি টাকার ওই প্রকল্প তিনটি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

অনুষ্ঠানে জানান হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তত্ত্বাবধায়নে ফুড সেইফটি প্রোগ্রাম, কেয়ার বাংলাদেশ’র তত্ত্বাবধায়নে কৃষি উৎস এবং একশনএইড বাংলাদেশ’র তত্ত্বাবধায়নে মেকিং মার্কেট ওয়ার্ক ফর উইম্যান নামের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে।

মন্ত্রী নাসিম বলেন, “বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের নিরাপদ খবারের নিশ্চিয়তা নিশ্চিত হয়নি।”

সহায়তা প্রকল্পের জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য পাওয়া নিয়ে মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ এটি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরসরি যুক্ত।

নেদারল্যান্ডস দূতাবাস যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা জনগণের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি মারগারেথা কিউলেনায়রি বলেন, “নিরাপদ খাদ্যের জন্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও বিপণন ব্যবস্থায় শক্ত ভ্যালু চেইন দরকার। প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে কৃষকরা উন্নতমানের বীজ ও কৃষি উপকরণ পাবে। এর মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হবে, বাড়বে নিরাপদ খাদ্য। কাজে অংশগ্রহণ ও সুযোগ বাড়বে নারীর।”

একশনএইড বাংলাদেশের আবাসিক পরিচালক ফারাহ্ কবির বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নে আমরা নারীবান্ধব কৃষি, বাজার ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই কাজ করছি।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেকিং মার্কেট ওয়ার্ক ফর উইমেন প্রকল্পের মাধ্যমে একশনএইড বাংলাদেশ নির্বাচিত নারী ও তাদের পরিবার এবং কমিউনিটির উন্নয়নে কাজ করবে। প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী চার বছরে ছয় হাজার কৃষি উদ্যোক্তা, ২০ হাজার কিশোর-কিশোরী, বাজার কমিটির ২৭০ জন সদস্য এবং ইউনিয়ন পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির ৪২০ জন সদস্যের সঙ্গে কাজ করা হবে।

কৃষি উৎস প্রকল্পে কেয়ার বাংলাদেশ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কাজ করবে। এজন্য ক্ষুদ্র দোকান মালিক, কৃষক ও নারী কৃষকদের নিয়ে কাজ করা হবে। তাদেরকে গুণগত মানের পণ্য ও সেবা দেওয়া হবে।

প্রকল্পের আওতায় ২৬ হাজার নারী কৃষকসহ ৬৫ হাজার ক্ষুদ্র কৃষককে নিয়ে আগামী তিন বছর কাজ করা হবে।

খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় এফএও বাংলাদেশে একটি দক্ষ ও উন্নত খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে, যা জনস্বাস্থ্য এবং খাদ্য বাণিজ্য জোরদারে ভূমিকা রাখবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পটি ২০১২ সালে চালু হয়; যার মাধ্যমে এরই মধ্যে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগার, একটি জাতীয় খাদ্যবাহিত রোগ নজরদারি পদ্ধতি, প্রশিক্ষিত ও ভালো উৎসের খাদ্য এবং রোগ-জীবাণু পর্যবেক্ষক, ভোক্তা সচেতনতা বিষয়ক প্রচার ও মৎস্য, হাঁস-মুরগি চাষ এবং ভ্যালু চেইনে স্বাস্থ্যসম্মত কৃষি পদ্ধতির বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া গেছে।

প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন দুটি প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে।