শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘ওস্তাদ রশিদ খান: অ্যাটাক অন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ইজ শকিং’।
প্রতিবেদনের শুরুতে বাংলাদেশে সম্প্রতি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ভাংচুর ও তার স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে উপমহাদেশের সংস্কৃতির ওপর অন্যতম আঘাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওই তাণ্ডবের খবর কলকতায় ওস্তাদ রশিদ খানের কাছে পৌঁছেছে।
প্রতিক্রিয়ায় দুঃখ ও বিরক্তি প্রকাশ করে ওস্তাদ রশিদ খান বলেন, “এটাই সীমাবদ্ধতা। আমি জানি না; মানুষ এতোটা নিচে নামতে পারে কীভাবে, যেখানে বাংলাদেশের রয়েছে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি।”
ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ-নৃত্যশিল্পী-যন্ত্রীদের নিয়ে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবে যোগ দেওয়ার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “গত নভেম্বরে আমি ঢাকায় পারফর্ম করি, যেখানে প্রায় ৬০ হাজার লোক আমার কনসার্ট শুনতে এসেছিল। আমি নিশ্চিত, যারা শিল্প ভালোবাসেন তারা এতো নৃশংস কোনো কিছু করতে পারেন না।”
“আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একটি কনসার্ট আয়োজনের মাধ্যমে খুব ভালো একটি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। শিল্প ও শিল্পীদের তিনি যে সম্মান দিয়েছেন তাতে আমরা খুবই খুশি।
“এমন সময়ে বাংলাদেশে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে আমি খু্বই কষ্ট পেয়েছি।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সোমবার রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত এক সতীর্থের মৃত্যুর পর মঙ্গলবার শহরজুড়ে তাণ্ডব চালায় মাদ্রাসাছাত্ররা। ওই সময় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ভাংচুরের পাশাপাশি সুর সম্রাটের স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রও পুড়িয়ে দেয় তারা।
মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভাংচুর করা হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের ব্যাংক এশিয়া, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র এবং জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ও।
আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনসহ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ওই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনা চলছে।