সন্ত্রাসী হামলায় একমাত্র ছেলে ফয়সল আরেফিন দীপনকে হারানোর চারদিনের মাথায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক-লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
Published : 04 Nov 2015, 07:19 PM
তিনি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে, ১৯৭২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কোনো নিরাপত্তার অভাব বোধ করিনি। কিন্তু আজকে সকাল থেকে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।”
নিরাপত্তাহীন বোধ করার কারণ জানতে চাইলে প্রবীণ এই অধ্যাপক বলেন, “না, কারণ বলব না। এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাই না।”
শনিবার শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের অফিসে খুন হন জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার দীপন। গত ফেব্রুয়ারিতে নিহত লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকার কারণ না জানালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বলেছেন, তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বেলা ১২টা থেকে ১টার মধ্যে তাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।
তবে কারা, কী কারণে হুমকি দিয়েছে তার বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি। সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোনো জিডি করা হয়নি।
আবুল কাসেম ফজলুল হককে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে দুপুরে প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, “সাংবাদিকদের কাছ থেকে হুমকির বিষয়টি জানার জন্য দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়ার কাছে ফোন করে সেটা জানার চেষ্টা করি।
“ডা. রাজিয়া জানিয়েছেন, স্যারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্যারও গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি জিডি করবেন।”
এ বিষয়ে বিকেলে ডা. রাজিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরাও সাংবাদিকদের কাছ থেকে জেনেছি।”
তবে ‘স্যারের’ ফোন বন্ধ কেন-প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হুমকি পেলে তো ফোন বন্ধ করতে হবে।”
সকালে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে অধ্যাপক আবুল কাসেম সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশ কতোক্ষণ প্রোটেকশন দিতে পারে আমাদের মত একজন সাধারণ নাগরিককে। আমরা যদি কাজ করি, বাইরে যাই যে কোনো সময় মেরে ফেলতে পারে।
“আজকে যে অভিজিৎকে মেরে ফেলছে, লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে, হাজার হাজার মানুষের মধ্যে অভিজিৎকে মেরে ফেলছে। মেরে তো ফেলতেই পারে।”
তিনি বলেন, “নিরাপত্তার অভাব বোধ করতাম যুদ্ধের নয় মাস। নিরাপত্তার অভাব বোধ করতাম ছয় দফা আন্দোলনের সময়।”
বাংলাদেশে মুক্তমনা লেখক-প্রকাশক হত্যায় এদেশীয় শক্তি জড়িত মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিদ্যমান রাজনৈতিক শক্তির নানা রকম সহায়তা এরা পাচ্ছে। এসব হামলার পেছনে শুধু আইএস, আল কায়েদা, আনসারুল্লাহ নয়, এদেশীয় একটি শক্তিও জড়িত। এদের কারা খুঁজে বের করবে?”
সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর থেকে সারাদিন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।