বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মুহাম্মদ খিজির খান হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন জেএমবি সদস্য তরিকুল ইসলাম মিঠু।
Published : 25 Oct 2015, 08:21 PM
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি ‘ঈমানী দায়িত্ব’ হিসেবে ‘পীর’ খিজির খানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে এক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটমকে জানিয়েছেন।
গত ৫ অক্টোবর রাজধানীর বাড্ডায় নিজের বাড়ির খানকা শরিফে খিজির খান খুন হওয়ার নয় দিন পর টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মিঠুকে।
২০০৫ সালে সারাদেশে বোমা হামলার ঘটনায় পাঁচ বছর কারাভোগ করেছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির এই সদস্য।
তাকে এবার গ্রেপ্তারের পর দুই দফায় আট দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর তিনি রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিবুল হকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মিঠু খুনের দায় নিয়ে সবিস্তার তা বর্ণনা করেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান এই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান।
আদালতে সংশ্লিষ্ট পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আবু হানিফ বলেন, “তারা (মিঠু) পীরদের হত্যা করাকে ইমানি দায়িত্ব মনে করেন।”
হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আটজনের নামই মিঠু বলেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মিঠুকে গ্রেপ্তারের সময় ঢাকার মিরপুর থেকে মো. আলেক বেপারী নামে একজনকেও পুলিশ আটক করে।
হত্যাকাণ্ডের দিন খিজিরের বাড়িতে যে গাড়িতে করে সবাই গিয়েছিল, তা আলেকই চালিয়েছিলেন বলে মিঠু দাবি করেন।
আলেককেও রোববার আদালতে হাজির করে পুলিশ। তবে তিনি স্বীকারোক্তি দেননি।
খিজির খুনের মামলায় আলেককে বিচারক কারাগারে পাঠালেও টেলিভিশনে ইসলামী অনুষ্ঠানের উপস্থাপক নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে সিআইডি।
আলেকের পাশাপাশি মিঠুকেও ফারুকী খুনের মামলায় দুই দিন রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম লুৎফর রহমান শিশির।
প্রায় ১৪ মাস আগের ফারুকীকে রাজধানীর রাজাবাজারের বাসায় গলা কেটে হত্যা করা হয়। খিজির খান হত্যাকাণ্ডের ধরনও এক। দুটি হত্যাকাণ্ডের পেছনে একই গোষ্ঠী জড়িত বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।
ফারুকী হত্যামামলায় এই পর্যন্ত জেএমবির একজন সদস্য এবং আহলে হাদিসের যুব সংঘের সাবেক সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে তদন্তে অগ্রগতি নেই।
ফারুকী চ্যানেল আইয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘শান্তির পথে’ ও ‘কাফেলা’ উপস্থাপনা করতেন। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত বাংলাদেশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি হাই কোর্ট মাজার মসজিদের খতিব ছিলেন।
২০১৪ সালের ২৭ অগাস্ট হত্যা করা হয়েছিল ইসলামী ফ্রন্টের নেতা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে। তার আগে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর গোপীবাগে খুন করা হয় কথিত পীর লুৎফর রহমানকে।
ওই দুটি হত্যাকাণ্ডের কোনো কূল-কিনারা গোয়েন্দারা করতে না পারলেও তাদের ধারণা, মতাদর্শিক বিরোধের কারণে জঙ্গিবাদীরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।