সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ‘শিগগিরই’ আদালত অবমাননা আইন করতে উদ্যোগ নেবেন বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
Published : 05 Oct 2015, 01:12 AM
রোববার এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “১৯২৬ সালের আদালত অবমাননার আইন ছিল। আজকে মিডিয়ার সম্প্রসারণ ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্ম হওয়ার কারণে আমার মনে হয় ওই আইন অনেকটাই অচল হয়ে গেছে।
“সে কারণে আমি আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি, দেশের আইনমন্ত্রী হিসেবে এই আদালত অবমাননা আইন যাতে অতি শিগগিরই আমরা সংসদে পাস করতে পারি সেই ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করব।”
আইন করার ক্ষেত্রে সবার বক্তব্য নেওয়া হবে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, “কারণ আমি মনে করি ও বিশ্বাস করি যে, সকলেই এ দেশের নাগরিক, তাই যারা যারা স্টেকহোল্ডার তাদের বক্তব্যও গ্রহণ করা হবে।”
আইন ও আদালত বিষয়ক প্রতিবেকদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘বিচার বিভাগীয় রিপোর্টি’ শীর্ষক ওই কর্মশালার আয়োজন করে সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম।
কর্মশালায় আইনমন্ত্রী বলেন, “দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে খ্যাত সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম। একইসঙ্গে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংবাদমাধ্যম সরকারের সহায়ক।
“এছাড়া সংবাদমাধ্যম জনগণকে মানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদান নিশ্চিত করে তাদেরকে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।
“..একথা অনস্বীকার্য, বিচার ও আইন সংশ্লিষ্ট খবর অন্যান্য সংবাদের তুলনায় কিছুটা ভিন্নধর্মী হওয়ায় সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আইন বিষয়ক রিপোর্টারদের বেশি দায়িত্ববান ও সাবধানী হওয়া প্রয়োজন।”
মন্ত্রী বলেন, “আদালত বিষয়ক প্রতিবেদনে কোনো ভুল তথ্য দিলে আদালত অবমাননার মামলার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে আদালত ও আইন বিষয়ক সাংবাদিকতা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। তাই আদালতের সংবাদের প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
“এখানে যা খুশি তাই লেখার সুযোগ নেই।..বিচার বিভাগের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় বা বিচার বিভাগ সম্পর্কে বিচার প্রার্থীদের মনে যাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাথতে হবে।”
আনিসুল হক বলেন, “..কোর্টের ভেতর প্রত্যেকটা মানুষ আসতে পারে না। অনেক ঘটনার ব্যাপারে অনেকের অনেক অভিজ্ঞতা আছে।..কোর্টের ভেতর আপনারা ছাড়া জনগণের উপস্থিতি তেমন নাই। আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি কীভাবে বসেন সেটা আমার গ্রামের মানুষ জানেন না। সে ছবিটাকে এই সুপ্রিম কোর্ট ভবন থেকে ক্যারি করে আপনাদেরকেই টেকনাফ-তেতুলিয়ায় নিয়ে যেতে হয়। ইট ইজ ভেরি হার্ড টাস্ক।”
ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৈনিক কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এম বদি-উজ-জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী আহসানুল করিম বক্তব্য দেন।