স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদ সীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানিতে তলিয়ে গেছে নয়টি উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক গ্রাম। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. শওকত আলী সরকার জানান, উপজেলার প্রায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমির আমন ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের মদনমোহন গ্রামের মতিউর, ছক্কু ও রাবেয়া বেগম জানান, তারা ১৪-১৫ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছেন। এ পর্যন্ত কোনো সাহায্য পাননি।
চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “আমার এলাকায় তিন হাজার পরিবার এখনও পানিবন্দি আর ২৫০ পরিবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ত্রাণের দুই মেট্রিক টন চাল পেয়েছিলাম। তা দুই শতাধিক মানুষকে দেওয়া হয়েছে।”
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাঁচা-পাকা সড়ক ও গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসতভিটা ছেড়ে উঁচু বাঁধ ও সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে বানভাসী মানুষ। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, জেলা প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের ২৫০ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে জরুরি বার্তা পাঠানো হয়েছে।