না ফেরার দেশে চলে যাওয়া এই ব্লগারকে নিয়ে কেউ জানিয়েছেন সমবেদনা, কেউবা নিজের অসহায়ত্ব ঝেড়েছেন সমাজের প্রতি, প্রশ্ন তুলেছেন মুক্তচিন্তার অধিকার নিয়ে।
শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরপর নিজ বাসায় নিলয় খুন হয়েছেন- এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
তাৎক্ষণিক অনেকেই বিশ্বাস করতে পারেননি এই ঘটনা, সাড়া চেয়ে ওয়ালে পোস্টও দেন কেউ কেউ। মেলেনি সাড়া। এরপরই পুলিশ নিশ্চিত করে গোড়ান টেম্পোস্ট্যান্ডের কাছে একটি পাঁচতলা ভবনের পঞ্চম তলায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় নিলয়কে, যিনি কাজ করতেন একটি বেসরকারি সংস্থায়।
সর্বশেষ বেলা ১টা ৮ মিনিটে সুরমা মেহজাবিন নামের একজনের পোস্ট ফেইসবুকে শেয়ার করেন নিলয়। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
এর ৫১ মিনিট পর নিলয়কে হত্যার খবরের মধ্যে ১টা ৫৯ মিনিটে মুহাম্মদ আসিফ নামে একজন নিলয়ের ফেইসবুক ওয়ালে লেখেন, “ভাই, ভাই, ভাই…।”
এরপর থেকে আরও অনেকেই নিলয়ের খোঁজ নিতে তার ফেইসবুকের ওয়ালে পোস্ট দিলেও কারো পোস্টেই আর সাড়া মেলেনি।
শহীদুল শাহেদ নামের একজন নিলয়ের ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন, “কিছু বলার নেইরে ভাই।”
পিংকী চৌধুরী বাবু লিখেছেন, “মাফ করে দিও নিলয়! কান্নার শক্তিটুকুও আর নেই!”
নিলয়কে খুনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। ফেইসবুক-ব্লগেও এনিয়ে লিখেছেন অনেকে।
পাশাপাশি প্রায় তিন মাস আগে থানায় গিয়েও জিডি করতে না পরার ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছেন অনেকে। নিলয় সোবহান নামের একজন গত ১৫ মে নিলয়ের সেই স্ট্যাটাসটিও তুলে দিয়েছেন ফেইসবুকে।
অলি আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, “বড় ভুল দেশে জন্মেছিলেন ভাই। এই দেশে চিন্তা করার ক্ষমতা থাকার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু নেই।”
সজীব বৈদ্য লিখেছেন, “দুর্ভাগ্য আপনার যে এই দেশে জন্মেছিলেন। এই দেশটার নিশ্চিত ভবিষ্যৎ হচ্ছে চরম মৌলবাদীদের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া। সেখানে কি দরকার কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করা!”
নিলয়ের সঙ্গে ওয়েবসাইটের ডোমেইন কেনার স্মৃতি নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রিন্স অরণ্য।
অর্কিড ফুল লিখেছে, “কি যন্ত্রণা আইডি আছে মানুষ নেই। কয়েকটা ঘুমের বড়ি খেয়েছি কিন্তু অস্থিরতা থামছে না।দাদা তুমি কোথায় গেলে?”
আবৃশা আবীর লিখেছেন, “আপনার দুর্ভাগ্য আপনি বাংলাদেশে জন্ম করেছিলেন। আপনার দুর্ভাগ্য আপনি চিন্তা করতে শিখেছিলেন। আপনার হত্যার বিচার হবে না এটা নিশ্চিত। শুধুই সমবেদনা, ক্ষতি যা হওয়ার তাতো হয়েই গেল।”
দিপ্তি তেরেসা পালমা লিখেছেন, “কি হইতেসে এসব? আপনি কি সত্যিই আর নেই?”
নাজিমুদ্দিন সামাদ লিখেছেন, “এসব কি হচ্ছে! নীলদা কথা বলেন। বলেন এসব কিচ্ছু হয়নি। আমি ভাবতেও পারছি না।”
আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, “নিলয়, তোমার ওয়ালে অর্থহীন কিছু কান্না এঁকে দিলাম।”
সানজিদা কাজি লিখেছেন, “নিলয়!!! প্লিজ কথা বল ভাই।”
নিলয়কে হত্যার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে।