ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সপ্তাহ না পেরোতেই মস্কো এমন প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছে।
ইউক্রেইন যুদ্ধের কৌশল ঠিক করতে কমান্ডারদের পরামর্শ নিলেন পুতিন
বর্তমানে ইউক্রেইনে অবস্থান করা রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী আক্রমণের পরিবর্তে রক্ষণাত্মক কৌশলে যুদ্ধ করছে।
Published : 17 Dec 2022, 04:09 PM
Updated : 17 Dec 2022, 04:09 PM
ইউক্রেইন যুদ্ধের পরবর্তী কৌশল কী হতে পারে সে বিষয়ে নিজের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডারদের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন শুক্রবার ‘অপারেশন্স হেডকোয়ার্টারে’ যান এবং দিনভর সেখানে বৈঠক করেছেন বলে শনিবার ক্রেমলিন থেকে জানানো হয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আক্রমণ করে রাশিয়া। শুরুতে রুশ বাহিনী সর্বাত্মক আক্রমণের মাধ্যমে ইউক্রেইনের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত অগ্রসর হয়ে দেশটির প্রায় এক- পঞ্চমাংশের দখল নিয়ে নেয়।
কিন্তু গত কয়েকমাসে রাশিয়াকে কয়েকটি অঞ্চলে হেরে গিয়ে পিছু হটতে হয়েছে।
প্রথমে তারা রাজধানী কিইভের আশেপাশের অঞ্চল থেকে পিছু হটে। তারপর ইউক্রেইনের দ্বিতীয় বৃহৎ নগরী খারকিভের দখল তাদের হাতছাড়া হয় এবং অতিসম্প্রতি তারা খেরসন নগরী থেকেও পিছু হটেছে।
এবারের যুদ্ধে ইউক্রেইনের যে চারটি অঞ্চল রাশিয়া সঙ্গে সংযুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পুতিন, খেরসন তার একটি।
টানা কয়েকটি পরাজয় দেখার পর গত অক্টোবরে ইউক্রেইন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর নেতৃত্বে পরিবর্তন আনেন পুতিন। বিমানবাহিনীর জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়।
বর্তমানে ইউক্রেইনে অবস্থান করা রাশিয়ার পদাতিক বাহিনী আক্রমণের পরিবর্তে রক্ষণাত্মক কৌশলে যুদ্ধ করছে। আর নতুন কৌশল হিসেবে রাশিয়া আকাশ হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে তীব্র ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া।
ফলে ইউক্রেইনের লাখ লাখ বেসামরিক মানুষ শীতকালে হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিনের পর দিন কাটাচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পানি সংকটও দেখা দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শনিবার পুতিনের বৈঠকের ভিডিও ক্রেমলিন থেকে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওতে একটি গোল টেবিলে পুতিনের চারপাশে প্রায় এক ডজন কর্মকর্তাকে দেখা যায়। যাদের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমোভও ছিলেন।
তারপর পুতিনকে জয়েন্ট টাস্ক ফোর্সের হেডকোয়ার্টারে অন্য একটি কনফারেন্স টেবিলে দেখা যায়। যেখান তিনি তার সামরিক বাহিনীর কমান্ডারদের যুদ্ধ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
পুতিনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কীভাবে অভিযান পরিচালনা করা যায় তার প্রতিটি দিক নিয়ে আমরা কমান্ডারদের মতামত শুনবো এবং একইসঙ্গে আমাদের তাৎক্ষণিক ও মধ্যমেয়াদী ব্যবস্থাগুলো কী হবে যে বিষয়ে আমি আপনাদের প্রস্তাবগুলো শুনতে চাই।”
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ইন্টারফেক্সের খবরে বলা হয়, পুতিন শুক্রবার পুরো দিন টাস্ক ফোর্স হেডকোয়ার্টারে কাটিয়েছেন।
পুতিনের ভ্রমণের বিষয় আর কিছু বা টাস্ক ফোর্স হেডকোয়ার্টার কোথায় অবস্থিত সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এ সম্পর্কিত খবর
“তারা তাদের লাখো সন্ত্রাসীকে ইউক্রেইনের ভূমিতে ডেকে এনেছে, আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং তাদের নিজ দেশে কি হচ্ছে সেটা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যাথা নেই।”
এবার পুতিন ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। যা সোভিয়েত পরবর্তী যুগে রাশিয়ার কোনও নেতার সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড।
পুতিন বিরোধীদের ভোটের শেষ দিন রোববার ভোটকেন্দ্রে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কথা রয়েছে। যে বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নুন এগেইনস্ট পুতিন’ বা ‘পুতিনের বিরুদ্ধে দুপুর’।
