ইরানে ২০২২ সালের ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভের পর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে পার্লামেন্ট ও বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্যদের নির্বাচিত করতে আলাদা আলাদাভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলেছে। ইরানের নেতৃবৃন্দের বৈধতা এবং জাতীয় সমর্থনের জন্য এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসাবে দেখা হচ্ছে।
কারণ, ২০২২-২৩ সালে ইরানে সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভ এং ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লব পরবর্তী সবচেয়ে বাজে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পর এই নির্বাচনেই জনগণ প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের রায় দিচ্ছে।
ইরানের শাসকগোষ্ঠীর বৈধতা জনরায়ে টিকিয়ে রাখতে হলে ভোটার উপস্থিতি বেশি হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু এবার ভোটার উপস্থিতি প্রত্যাশার চেয়ে কম থাকার আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। সরকারি জরিপে মাত্র প্রায় ৪১ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির আভাস পাওয়া গেছে। নির্বাচনে বেশিরভাগ মানুষেরই আগ্রহ দেখা যায়নি।
ইরানে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত সবশেষ পার্লামেন্ট নির্বাচনে রেকর্ড নিম্ন ৪২ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এবার ভোটার উপস্থিতির হার তার চেয়েও কম বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ইরানের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ২৯০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৫ হাজারের বেশি প্রার্থী। আর ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৪৪ জন।
সর্বপ্রথম ভোট দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তেহরানের মধ্যাঞ্চলীয় একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য নগরীর বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রেই খুব কম সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী এবং বিরোধীদলগুলো এবারের নির্বচনে লোকজনকে ভোট দিতে যেতে নিরুৎসাহিত করতে স্যোশাল মিডিয়ায় ‘নো ভোট’ এবং ‘ইলেকশন সার্কাস’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচার চালিয়েছে। ভোটার উপস্থিতি বেশি হলে তা ইরানের শাসকগোষ্ঠীকে বৈধতাই দেওয়া হবে বলে যুক্তি দেখিয়েছে তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার ভোটের আংশিক ফল প্রকাশ করা হতে পারে বলে ব্যালটগুলোর বেশির ভাগই হাতে গণনা করা হবে। তাই চূড়ান্ত ফল প্রকাশে সময় লাগতে পারে।