যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়িতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-এফবিআই’য়ের তল্লাশি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা।
তাদের অনেকেই ট্রাম্পের মতো একই দাবির প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ‘উইচ হান্ট’ চলছে।
যদিও বলা হচ্ছে, সরকারি কাগজপত্র নাড়াচাড়ায় ট্রাম্পের অসাবধানতা এবং হোয়াইট হাউজের গোপন নথি সরানোর অভিযোগ তদন্তের আওতায়ই এফবিআই এ তল্লাশি চালিয়েছে।
রিপাবলিকান এক কৌশলবিদ সেথ উইদারস ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বাড়িতে তল্লাশিকে ‘বিস্ময়কররকম বাড়াবাড়ি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিবিসি জানায়, ট্রাম্পের অনেক সমর্থকও মঙ্গলবার সরব হয়েছে। ট্রাম্পের সমর্থনে তারা নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারের বাইরে সমবেত হয়েছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তারা বলেছে, সোমবার এফবিআই যে তল্লাশি চালিয়েছে তা ট্রাম্পকে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী দৌড়ে সামিল না হতে দেওয়ার জন্য ডেমোক্র্যাটদের একটি ষড়যন্ত্র।
ওদিকে, টুইটারে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সংখ্যালঘিষ্ঠ নেতা কেভিন ম্যাককার্থি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, বিচার বিভাগ “আগ্রাসী রাজনীতিকীকরণের এক অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।”
রিপাবলিকানরা আবার প্রতিনিধি পরিষদের দখল ফিরে পেলে বিচার বিভাগের তদন্ত করবে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ডকে ধামকিও দেন তিনি।
ট্রাম্পের সমর্থনে সরব আরেক রিপাবলিকান মারজোরি টেলর গ্রিন এক টুইটে লিখেছেন, “এফবিআই- এর ফান্ড বাতিল করা হোক।” আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে ‘রাজনৈতিক শত্রুদের বিনাশ করতে’ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ট্রাম্পের আরেক ঘনিষ্ঠ মিত্র রিপাবলিকান লরেন বোয়েবার্ট এফবিআই তল্লাশিকে ‘পুরোপুরি অ-আমেরিকান সুলভ’ বলে মন্তব্য করেছেন। ওদিকে, ফ্লোরিডার রাজ্য আইনসভার ট্রাম্পপন্থি আইনপ্রণেতা অ্যান্থনি সাবাতিনি বিচারবিভাগের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং এফবিআই এজেন্টকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
রিপাবলিকানদের একের পর এক এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এবং অভিযোগের মধ্যে ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান পার্টি উভয়ই ফায়দা লোটার চেষ্টায় আছে। আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে দলের সদস্যদের জন্য তহবিল সংগ্রহে এই ইস্যুকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। ট্রাম্পকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে পাঠানো হচ্ছে ইমেইল এবং টেক্সট।
বিবিসি বলছে, ট্রাম্পের বাড়িতে এফবিআই তল্লাশির ঘটনা এবং এর বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়া ক্ষোভ বদলে দিতে পারে রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ।
ট্রাম্প শিবির সক্রিয় হয়ে উঠে নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদেরকে ভোট দিতে পারে। আর এমন হলে ট্রাম্পও প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে আগেভাগেই প্রার্থিতা ঘোষণা করতে পারেন।
ট্রাম্প যদিও এখনও ২০২৪ সালের নির্বাচনী দৌড়ে নামার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। কিন্তু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইঙ্গিত তিনি দিয়ে রেখেছেন।
তবে সোমবার তার ফ্লোরিডার বাড়িতে এফবিআই তল্লাশির পর রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের কেউ কেউ বলছেন, ট্রাম্পের নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ হতে পারে।