টাইফুন খানুনের কবলে জাপান, ওকিনাওয়ার এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

ছবি: রয়টার্স।

দশকের সবচেয়ে বড় টাইফুন খানুনের কবলে পড়েছে জাপানের পশ্চিমাঞ্চল। ওকিনাওয়া দ্বীপে এক-তৃতীয়াংশ বাড়িঘরই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এই খানুনের প্রভাবে এরই মধ্যে বন্যার কবলে পড়া চীনের ভারি বর্ষণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।

এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে চীনের উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানা সবচেয়ে খারাপ ঝড়ের কবলে পড়েছে রাজধানী বেইজিং। ঝড়ের কারণে চীনে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে বিবিসি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া আরও বেশি বেশি এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি বয়ে আনবে।

টাইফুন খানুন এসেছে আগের দুটো টাইফুন তালিম এবং ডকসুরির পর। এইদুটো সুপার টাইফুনে আগেই লন্ডভন্ড হয়েছে ফিলিপিন্স এবং তাইওয়ান। গত কয়েকসপ্তাহে এ ঝড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনেরও বেশি মানুষের।

টাইফুন খানুন বুধবার চীনের উত্তর-পূর্ব উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস আছে। তবে আপাতত এই ঝড় জাপানের মূল ভূখণ্ডের দিকেই বয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে পূর্বাভাসে।

ঘন্টায় ২৫২ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া খানুনের প্রভাবে বুধবার জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপই সবচেয়ে বিপর্যস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওকিনাওয়া থেকে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওকিনাওয়ার নাহা বিমানবন্দরে বাতিল হয়েছে প্রায় ৯শ’ ফ্লাইট। দ্বীপটির জন্য এখনই পর্যটনের মোক্ষম সময়।

জাপানে বছরের এই সময়ে এমন শক্তিশালী ঝড় খুব বিরল। তবে জলবায়ু বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন থেকেই সতর্ক করে বলে আসছেন, বিশ্ব ঊষ্ণায়ন ঝড় এবং তাপপ্রবাহের মাত্রা বাড়াবে। এই দুই ঝড় গতমাসে এশিয়ার কয়েকটি স্থানে আঘাত হেনছে।

টাইফুনের আগে এশিয়ার বিশাল অংশ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়েছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে জাপানের ৯ হাজারেরও বেশি মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ওদিকে, চীনেও কয়েকস্থানে রেকর্ড তাপমাত্রায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে।

‘ফ্রন্টিয়ারস ইন আর্থ সায়েন্স’ জার্নালে ২০২১ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে ১৯৭৯ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে টাইফুনের প্রভাব খতিয়ে দেখা হয়েছে। এতে পূর্বভাস দিয়ে বলা হয়েছে, একবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ভূখন্ডে দ্বিগুণ ধ্বংসাত্মক শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে টাইফুন।