সিআইএ’কে দিয়ে চীনবিরোধী গোপন তৎপরতা চালিয়েছেন ট্রাম্প

সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ একটি ছোট দল গঠন করে অনলাইনে ভুয়া পরিচয়ে চীন সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার চালায়।

রয়টার্স
Published : 15 March 2024, 12:04 PM
Updated : 15 March 2024, 12:04 PM

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরের মধ্যে ডনাল্ড ট্রাম্প চীনের স্যোশাল মিডিয়ায় মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে গোপন এক অভিযান চালানোর অনুমোদন দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল, চীন সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা।

অতি গোপন এই অভিযান সম্পর্কে সরাসরি জানেন, এমন কয়েকজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা এ খবর জানিয়েছেন। সাবেক তিন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান চালানোর জন্য সিআইএ একটি ছোট দল গঠন করে।

দলটির সদস্যরা অনলাইনে ভুয়া পরিচয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার চালাতে শুরু করে। ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল এই গোপন অভিযান। এর আগে অভিযানটি সম্পর্কে কোনও খবর প্রকাশ পায়নি।

চীন গত দশকে বিশ্বজুড়ে দ্রুতই প্রভাব বাড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্য চুক্তি এবং ব্যবসায় অংশীদারত্ব বাড়িয়েছে দেশটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো রয়টার্সকে জানিয়েছে, সিআইএ-র দলটি চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পাওয়া অর্থ বিদেশে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ প্রচার করে। তাছাড়া, চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-কে দুর্নীতিতে জর্জরিত প্রকল্প বলেও প্রচার চালানো হয়।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে এটি (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) চীনের শত শত কোটি ডলারের অর্থায়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন সরকার অর্থ অপচয় করছে বলে প্রচার চালায় সিআইএ।

সিআইএ- এর এ অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে চাননি মার্কিন কর্মকর্তারা।তবে তাদের ভাষ্য, গোয়েন্দা দল গোপন পরিচয়ে চীন সরকারের জন্য মর্যাদাহানিকর বয়ান প্রকাশ করলেও তা ছিল ‘সত্য তথ্যের’ ভিত্তিতেই।

সাবেক দুই মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতাদের হতবিহ্বল করে ফেলা। যাতে বেইজিংয়ের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেটে অনধিকারপ্রবেশ খুঁজে বেড়াতে তাদেরকে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়।

এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “তারা (চীন সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টি) অস্তিত্ব নেই এমন কোনও কিছু খুঁজে বেড়াক, সেটিই আমরা চেয়েছিলাম।”

সেই গোপন অভিযান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন আমলে এখনও চলছে কি না এবং এ অভিযানের প্রভাব কী, সে সম্পর্কে কিছু জানতে সক্ষম হয়নি রয়টার্স। বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র কেট ওয়াটার্স এই অভিযান চালু আছে কিনা সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দুই গোয়েন্দা ইতিহাসবেত্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্টের নির্দেশে হোয়াইট হাউজ থেকে সিআইএ-কে এ ধরনের কোনও গোপন অভিযান চালানোর এখতিয়ার দেওয়া হলে, সাধারণত নতুন প্রশাসন এলেও তা অব্যাহত থাকে।

এবছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে চলেছে। এ নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের প্রার্থী হওয়াটা একরকম নিশ্চিত। ট্রাম্প যদি আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি চীনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।