নরওয়েতে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় তালেবান

নরওয়ের রাজধানী অসলোতে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন আফগানিস্তানের তালেবান সদস্যরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 02:20 PM
Updated : 24 Jan 2022, 02:20 PM

আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর ইউরোপে তালেবানের এটিই প্রথম আলোচনা। বিবিসি জানায়, এই আলোচনা চলার কথা রয়েছে তিনদিন।

আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মানবিক সংকটের বিষয়টি আলোচনায় স্থান পাবে। জাতিসংঘ বলছে, ৯৫% আফগানের যথেষ্ট পরিমাণ খাবার নেই।

তালেবানের এই আলোচনাকে কেন্দ্র করে ইউরোপে একাধিক বিক্ষোভ হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, আলোচনা করে তালেবানকে পুরস্কৃত করা উচিত নয়।

নরওয়েতে রোববার তালেবান সদস্যরা মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি।

নারীবাদী এক কর্মী জামিলা আফগানি বলেছেন, “আলোচকরা আলোচনায় সদিচ্ছা দেখিয়েছেন। তাদের কথার সঙ্গে কাজের কতটুকু মিল থাকে তা দেখা যাক।”

বলা হচ্ছে সোমবার পশ্চিমা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তালেবান সদস্যদের আলোচনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এইদিনের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোতে জব্দ থাকা আফগানিস্তানের কোটি কোটি ডলার ছাড় করানোর অনুরোধ জানাবে তালেবান।

আফগানিস্তানে বেকারত্ব বেড়ে গেছে। বেড়েছে খাবারের দামও। দেশটির মুদ্রার মান কমছে। ব্যাংকগুলো নগদ উত্তোলনের সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, আফগানিস্তানের জনসংখ্যার ৫৫% অনাহারের হুমকির মুখে আছে।

তালেবান প্রতিনিধি শফিউল্লাহ আজম এপি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “আমরা তাদেরকে (পশ্চিমা) আফগান সম্পদ অবমুক্ত করা এবং রাজনৈতিক কারণে সাধারণ আফগানদের শাস্তি না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।”

“অনাহারের কারণে, মারাত্মক শীতের কারণে, আমি মনে করি রাজনৈতিক বিরোধের জেরে আফগানদের শাস্তি দেওয়া নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য সময় এসেছে আফগানদের সমর্থন করার,” বলেন শফিউল্লাহ।

বৈঠকে পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতরা আরও বেশি করে সবার অংশগ্রহণমূলক তালেবান সরকারের গুরুত্ব এবং মানবাধিকারের ওপর জোর দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তালেবান বেশিরভাগ নারী কর্মীকে বাড়িতে থাকতে বলেছে। মাধ্যমিক স্কুলগুলো শুধু ছেলে শিক্ষার্থী এবং পুরুষ শিক্ষকদের জন্য খোলা রয়েছে।

এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য বেশ কয়েকজন নারী তালেবানের হামলার নিশানা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিখোঁজ বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে তালেবান এ ঘটনায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করছে।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর মানবাধিকারকর্মী এবং সাংবাদিকরাও তাদের হামলার নিশানা হয়েছে। বিশ্বের কোনও দেশ এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানিকেন হুইটফেল্ড বলেছেন, “তালেবানের সঙ্গে এই বৈঠক মানেই তাদেরকে বৈধতা দেওয়া বা স্বীকৃতি দেওয়া নয়। তবে আমাদেরকে অবশ্যই দেশটির ডি ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।”