যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে ‘ভ্রমণ বর্ণবাদের’ অভিযোগ নাইজেরিয়ার

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে যুক্তরাজ্য আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের লাল তালিকাভুক্ত করায় এর তীব্র সমালোচনা করেছে দেশটি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2021, 06:21 PM
Updated : 6 Dec 2021, 06:21 PM

আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ কড়াকড়িকে ‘ভ্রমণ বর্ণবাদ’ আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত নাইজেরিয়ার হাই কমিশনার সরাফা তুনজি ইসোলা।

যুক্তরাজ্যে ওমিক্রনের দাপট কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বেড়ে যেতে পারে বলে সদ্যই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর পল হান্টার। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ব্রিটিশ সরকার এরই মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ বিধি কঠোর করেছে।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যের লাল তালিকাভুক্ত সব দেশই আফ্রিকার। এই তালিকায় সোমবার ১১ তম দেশ হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে নাইজেরিয়া। নতুন নিয়মে নাইজেরিয়া থেকে কেউ ‍যুক্তরাজ্যে গেলে তাকে ১০ দিন হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যে থাকা নাইজেরীয়রা। অর্থ সংকটে থাকা অনেক নাইজেরীয়ই হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার খরচ জোগানো নিয়ে ঝামেলায় পড়েছেন। তারা ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্তকে অন্যায় এবং অর্থনৈতিক বোঝা বলে সমালোচনা করছেন।

সোমবার যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত নাইজেরিয়ার হাই কমিশনার সরাফা ইসোলা বিবিসি-কে বলেন, “বেছে বেছে পদক্ষেপ না নিয়ে বরং বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে পদক্ষেপ নেওয়াটাই কাম্য ছিল।”

এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের কথার প্রতিধ্বনি করে সরাফা আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের কিছু দেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করাকে ‘ভ্রমণ বর্ণবাদ’ বলে বর্ণনা করেন।

ওমিক্রন আতঙ্কে বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাকে দু’দিন আগেই ‘ভ্রমণ বর্ণবাদ’ আখ্যা দেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও। তিনি বলেছিলেন, “বিশ্বের সব অঞ্চলেই ভাইরাস আছে। কিন্তু বিশেষ করে একটি অঞ্চলের উপর যেভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না।”

এরপরই সোমবার বিবিসি টুডে প্রোগ্রামে নাইজেরীয় হাই কমিশনার সরাফা বলেন, “ভ্রমণে কড়াকড়ির পদক্ষেপ এই অর্থে বর্ণবাদ যে, আমরা ‘এন্ডেমিক’ (নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলে স্থায়ী রোগ) মোকাবেলা করছি না। আমরা ‘প্যানডেমিক’ (বৈশ্বিক মহামারী) মোকাবেলা করছি। যখনই আমাদের সামনে কোনও চ্যালেঞ্জ আসবে, তখন সহযোগিতার ভিত্তিতেই তা মোকাবেলা করতে হবে।”

সরাফার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রী কিট ম্যালথাউস বলেছেন, “ভ্রমণ বর্ণবাদ” এর মতো ভাষার ব্যবহার খুবই দুঃখজনক।

বিবিসি-কে তিনি বলেন, “ভ্রমণ কড়াকড়ির কারণে মানুষের যে দুর্ভোগ হচ্ছে সেটি আমরা বুঝি। কিন্তু আমরা এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে কিছুটা সময় হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছি, যাতে আমাদের বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাস নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং এটি কতটা চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে সেটি মূল্যায়ন করে দেখতে পারেন।”