মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী

মালয়েশিয়ার আপিল আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেয়েছেন এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, যাকে তিন কেজি ৮৭৫ গ্রাম গাঁজা রাখার অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিল দেশটির হাই কোর্ট।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2021, 03:33 PM
Updated : 26 Nov 2021, 03:33 PM

দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টার এক প্রতিবেদনে জানায়, হাবিবুল হাসান খান নামের ২৬ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছিলেন।

২০১৭ সালে সেই হোস্টেল কক্ষ থেকে গাঁজাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  দুই বছর পর সেই মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় হাই কোর্ট। পরে তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

মালয়েশিয়ার তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার হাবিবুলের মঞ্জুর করে এ মামলার রায় দেয়। তাতে বলা হয়, হাবিবুল তার কক্ষে গাঁজা থাকার কথা জানতেন, এটা প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।

যদিও গাঁজার ব্যাগটি হাবিবুলের কক্ষেই পাওয়া গিয়েছিল, আত্মপক্ষ সমর্থনে হাবিবুল বলেছিলেন, ব্যাগটি ছিল জাওয়াদ নামে অন্য এক ছাত্রের।

জাওয়াদ থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। গাঁজাসহ হাবিবুল গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিনই তিনি আত্মহত্যা করেন।

আপিল বেঞ্চের বিচারক হানিপাহ ফারিকউল্লাহ বলেন, বিচারিক আদালত হাবিবুলের আত্মপক্ষ সমর্থনে দেওয়া ওই বক্তব্য বিশ্বাস না করে ধরেই নিয়েছিলেন যে অভিযোগ অস্বীকার করার জন্য আসামি ওই যুক্তি দিচ্ছে। 

রায়ে বলা হয়, নিম্ন আদালতের বিচারক মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন হোস্টেল ওয়ার্ডেন শাজেরীন কামারুদ্দিনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে। ওয়ার্ডেন সেখানে বলেছিলেন, তার কাছে অভিযোগ ‘স্বীকার করেছিলেন’ হাবিবুল।

আর ওই সাক্ষ্য মামলার প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা আইনগতভাবে নিম্ন আদালতের বিচারকের ‘ভুল’ ছিল মন্তব্য করে আপিল বেঞ্চের বিচারক বলেছেন, ওয়ার্ডেনের জবানবন্দি আদৌ গ্রহণযোগ্য ছিল না, কারণ তাকে ‘সঠিক প্রশ্নগুলোই’ বিচারক করেননি।

হাবিবুলকে ১৯৫২ সালের বিপজ্জনক মাদক আই নের ৩৯(বি)(১) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এই ধারায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার শাস্তি হয় মৃত্যুদণ্ড।

আসামিপক্ষের আইনজীবী হিস্যাম তেহ পোহ তেইক মামলার শুনানিতে যুক্তি দিয়েছিলেন, ওয়ার্ডেন শাজেরীন কামারুদ্দিন যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা রাষ্ট্রপক্ষের অন্য সাক্ষীদের সাথে মেলে না।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নুরুল ফারহানা খালিদ দাবি করেছিলেন, গাঁজার ব্যাপারে হাবিবুল জানতেন এবং ওই ব্যাগ তার হেফাজতে, তার নিয়ন্ত্রণেই ছিল।

আপিল বিভাগ রায়ে বলেছে, গাঁজার কথা হাবিবুল জানতেন, তা প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ।