যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ডেভিড জুলিয়াস ও অডার্ম প্যাটাপুটেনকে এবার যৌথভাবে এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সোমবার নোবেল কমিটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় তাদের নির্বাচিত করার কথা জানায়।
সূর্যের ঊষ্ণতা কিংবা প্রিয়জনের স্পর্শ মানবদেহ কীভাবে অনুভব করে তার গবেষণায় এই গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর।
মানবদেহের যে নার্ভ সেন্সরের কারণে আমাদের ত্বক তাপ অনুভব করতে পারে সেই সেন্সরকে শনাক্ত করতে অবদান রেখেছেন জুলিয়াস।
আর প্যাটাপুটেন মানবদেহের কোষে আলাদা চাপ-সংবেদনশীল সেন্সর খুঁজে পেয়েছেন। এই সেন্সরের কারণে দেহ কোনও উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারে।
তাদের আবিস্কারকে কাজে লাগিয়ে ক্রনিক ব্যথাসহ আরও নানা ধরনের রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি বের করার চেষ্টা চলছে।
তাছাড়া, তাদের কাজের ওপর ভিত্তি করে আরও অনেক তাপ-সেন্সরও আবিস্কার করা হচ্ছে। জুলিয়াস এবং প্যাটাপুটেন ঠান্ডা শনাক্ত করার সেন্সরও খুঁজে পেয়েছেন।
ডেভিড জুলিয়াস সান ফ্রান্সিসকোয় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। আর অডার্ম প্যাটাপুটেন কাজ করেন আমেরিকান স্ক্রিপস রিসার্চ ইন্সটিটিউটে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে দুই গবেষকের আবিস্কারকেই ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও গভীর চিন্তাশীল’ অবদান হিসাবে উল্লেখ করেছেন নোবেল প্রাইজ কমিটির পরিচালক।
নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (১১ লাখ মার্কিন ডলার) অর্থ এই দুইজন সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।
গত বছর চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভে জে অল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হফটন।
হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কার এবং এর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তারা এই সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হন। তার আগের বছরও চিকিৎসায় তিন বিজ্ঞানীকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল।
সাধারণত প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর এই পুরস্কারের জনক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
তবে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত বছরের মতো এবারও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেছে নোবেল কমিটি।
তারপরও নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের অনুপস্থিতিতেই এ বছর স্বল্প পরিসরে স্থানীয়ভাবে নোবেল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজনের আশা প্রকাশ করেছে ফাউন্ডেশন।
এ অনুষ্ঠান টেলিভিশন এবং নোবেল প্রাইজের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলেও জানিয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশন।
তবে অসলোয় নোবেল শান্তি পুরস্কার অনুষ্ঠান করেই দেওয়ার সম্ভাবনা খোলা রেখেছে নরওয়ের নোবেল কমিটি। নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে নরওয়ে থেকে।
চিকিৎসায় নোবেলের মধ্য দিয়ে ৪ অক্টোবর থেকে এই পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা শুরু হল।
এরপর ৫ অক্টোবর পদার্থবিদ্যা, ৬ অক্টোবর রসায়ন, ৭ অক্টোবর সাহিত্য এবং ৮ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া, ১১ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে পুরস্কার বিজয়ীর নাম। ১৯০১ সাল থেকে এই নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়ে আসছে।