অভিবাসীদের বৈধ করতে ৮ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা বাইডেনের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই জো বাইডেন নতুন অভিবাসন আইনের প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেছেন, যা বাস্তবায়িত হলে সে দেশে বসবাসরত ১ কোটি ১০ লাখ অনিবন্ধিত অভিবাসীর আট বছরের মধ্যে বৈধ হওয়ার পথ খুলবে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2021, 06:19 AM
Updated : 19 Jan 2021, 06:19 AM

আর এর মধ্য দিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি বদলে দিতে জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বুধবার বাইডেনের অভিষেকের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঝঞ্ঝামুখর চার বছরের মেয়াদের ইতি ঘটতে যাচ্ছে।

ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নীতি বদলে ফেলা হয়েছিল, সেগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর আগে থেকেই দিয়ে আসছিলেন বাইডেন।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অভিবাসনের নিয়ম বদলাতে তৎপর হন রিপাবলিকান ট্রাম্প। সে সময় সাতটি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে মেট ১৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে কড়াকড়ি চলছে।

তার উত্তরসূরি বাইডেন দায়িত্বের প্রথম দিনই সাত মুসলিম দেশের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে নতুন নির্বাহী আদেশ দেবেন বলে তার হবু চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইন আগেই জানিয়েছিলেন।

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে কাজ শুরু করেছিলেন, তা আর এগিয়ে নেওয়া হবে না প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। তার বদলে সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছেন তিনি।

তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাইডেন ‘স্মার্ট বর্ডার এনফোর্সমেন্টে’ অর্থ ব্যয় করবেন। বন্দর ও সীমান্তের প্রবেশ পথগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদার করতে তহবিল যোগাবেন।

ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাইডেনের নতুন অভিবাসন আইনের প্রস্তাব বুধবারই কংগ্রেসে পাঠানো হবে। মধ্য আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রমুখী অভিবাসনের মূল কারণগুলো খতিয়ে দেখার ওপর জোর দেওয়া হবে সেখানে। 

বাইডেন ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নতুন অভিবাসন নীতির কেন্দ্রে থাকবে আট বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অনিবন্ধিত তবে যোগ্য অভিবাসীদের পাঁচ বছরের জন্য একটি অস্থায়ী অনুমতি দেওয়া হবে।

এর মধ্যে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি নিয়মিত কর দেওয়াসহ অন্যান্য শর্ত পূর্ণ করা হলে পাঁচ বছর পর তাদের গ্রিন কার্ড দেওয়া হবে। এর তিন বছর পর তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অন্তত চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তারাই ওই আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।

শৈশবে যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তারা ড্রিমার্স অ্যাক্টের আওতায় এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত বা দুর্দশায় থাকা দেশ থেকে আসা নাগরিকরা টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস প্রোগ্রামের আওতায় এখনই গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাইডেনের এই পরিকল্পনা ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও অধিকারকর্মীদের প্রশংসা পাচ্ছে। 

তবে নতুন এই আইন বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।