যুক্তরাজ্যে ‘নতুন ভোর’, আস্থার প্রতিদান দেবার প্রতিশ্রুতি জনসনের

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টিকে ‘ঐতিহাসিক’ জয় এনে দেয়ার পর আগামী মাসের মধ্যে ব্রেক্সিট সম্পন্ন এবং ভোটারদের আস্থার প্রতিদান দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2019, 12:01 PM
Updated : 13 Dec 2019, 04:15 PM

নতুন সরকার গঠনে অনুমতি চাইতে তিনি এখন রানি এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

সব আসনের ফল চূড়ান্ত হওয়ার আগেই বিরোধীদের চেয়ে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা রক্ষণশীল দলের এ শীর্ষ নেতা জনরায়ের প্রত্যাশা মেটাতে ‘জনগণের সরকার’ গঠন এবং ‘সার্বক্ষণিক কাজ’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নির্বাচনে ভরাডুবি মেনে নিয়েছেন বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। পরবর্তী নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেবেন না জানিয়ে তিনি দলপ্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ইউরোপের ২৮ দেশের জোট থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ কার্যকর বা ব্রেক্সিটই মূল ইস্যু হিসেবে আবির্ভূত হওয়া বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে বিরোধী লেবার পার্টি এমনকি মিডল্যান্ডস ও উত্তরপূর্ব ইংল্যান্ডের মতো ঘাঁটি অঞ্চলগুলোরও আসন খুইয়েছে। ওয়েলসে তারা হারিয়েছে ৬টি আসন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী. পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনের মধ্যে রক্ষণশীলরা একাই জিতেছে ৩৬৫টি।

লেবার ২০৩, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ৪৮, লিবারেল ডেমোক্রেটরা ১১ এবং আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি) জয়লাভ করেছে ৮টি আসনে।

চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে নাইজেল ফারাজের ব্রেক্সিট পার্টি চমক দেখালেও, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তারা কোনো আসনই জিততে পারেনি।

বিবিসি বলছে, জনসনের নেতৃত্বে এবার কনজারভেটিভ পার্টি ১৯৮৭ সালের পর সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জিতেছে, অন্যদিকে লেবার করেছে ১৯৩৫ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফল।

জয় নিশ্চিত হওয়ার পর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে যুক্তরাজ্যে ‘নতুন সূর্য’ উদিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর লেবারের টনি ব্লেয়ারও এমন কথাই বলেছিলেন।

লেবার পার্টির অনেক সমর্থক বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পার্টিকে ভোট দিয়েছে দাবি করে জনসন সেসব ভোটারদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

“হয়তো আগামীবারই আপনারা ফের লেবারেই ফিরে যেতে চাইবেন; যদি তাই হয়, তাও এবার আমার উপর আস্থা রাখায় আমি কৃতজ্ঞ, আমি আপনাদের সমর্থনকে ব্যর্থ হতে দেবো না। আমাকে ভোট দিয়ে আপনারা যে ঠিক কাজটিই করেছেন, তা নিশ্চিতে আমি সার্বক্ষণিক, দিন রাত কাজ করার লক্ষ্য ঠিক করেছি, যেন ভবিষ্যতেও আপনারা আমাকেই সমর্থন করেন,” বলেছেন তিনি।

রক্ষণশীলদের এবারের জয়ের তোড়ে কেবল লেবাররাই দিশা হারায়নি, এসএনপি বাদে অন্য দলগুলোরও ভরাডুবি হয়েছে।

লিবারেল ডেমোক্রেট দলের নেতা জো সুইনসন এমনকি নিজের আসনেই ১৪৯ ভোটে হেরে গেছেন। পরাজয়ের পরপরই দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

‘বিজয়ী ভাষণে’ জনসন জানান, টোরিদের এ অসামান্য জয়ে ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে দীর্ঘদিন ধরে যে অচলাবস্থা চলছিল, তা নিরসনের প্রবল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

ব্রেক্সিটকেন্দ্রিক আরেকটি গণভোট আয়োজনের ‘যে ঘৃণ্য হুমকি’ সৃষ্টি হয়েছিল, এবারের নির্বাচন তাতে ইতি টানবে বলেও প্রত্যাশা তার।

“আমরা নির্ধারিত সময় ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই ব্রেক্সিট সম্পন্ন করবো, কোনো যদি, তবে, কিন্তু নেই,” বলেছেন জুলাইয়ে টেরিজা মে-র হাত থেকে দল ও ডাউনিং স্ট্রিটের দায়িত্ব নেয়া জনসন।