দেয়ালের বরাদ্দ না পেলে জরুরি অবস্থা জারির হুমকি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না পেলে কংগ্রেসকে পাশ কাটাতে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে ফের জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2019, 04:59 AM
Updated : 11 Jan 2019, 04:59 AM

বৃহস্পতিবার মেক্সিকো সীমান্তের টেক্সাস অংশ পরিদর্শনে যাওয়া ট্রাম্প পুনর্বার এ হুমকি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি যে কোনো মূলে দেয়াল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অন্যদিকে ডেমোক্রেটরা বলছে, তারা ‘জনগণের করের টাকায়’ এ প্রতিশ্রুতি পূরণ হতে দেবে না।

দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের ব্যয় নির্বাহে প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের বিলটি আলোর মুখ দেখেনি।

ট্রাম্প বলেছেন, দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ ছাড়া তিনি কোনো অর্থবিলে স্বাক্ষর করবেন না।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের এ পাল্টাপাল্টিতে ২২ ডিসেম্বর থেকে মার্কিন কেন্দ্রীয় সরকারের অসংখ্যা বিভাগ ও সংস্থায় অচলবাস্থা দেখা দেয়।

জরুরি অবস্থা জারি করেই এই অচলাবস্থা নিরসনের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।

“আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিতে পারিৃ। কিন্তু তা করা উচিত হবে না, এটি সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান,” সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

জরুরি অবস্থা জারি হলে কংগ্রেসের ডেমোক্রেট সদস্যরা এর বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে নামতে পারবেন। যে লড়াইয়ে সহজেই জিতে যাবেন বলেও ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

অচলাবস্থা নিরসনে বুধবার শীর্ষ দুই ডেমোক্রেট নেতা ন্যান্সি পেলোসি ও চাক শুমারের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছিলেন ট্রাম্প; যদিও সেই বৈঠকের স্থায়িত্বকাল ছিল একেবারেই অল্প।

ডেমোক্রেট নেতারা দেয়াল নির্মাণের অর্থায়নে অস্বীকৃতি জানালে সঙ্গে সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এরপর থেকে নতুন করে আলোচনা শুরুর কোনো লক্ষণ বা উদ্যোগ নেই, জানিয়েছে রয়টার্স।

বার্তা সংস্থাটি বলছে, রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের এক চতুর্থাংশ বিভাগ ও সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। ২০ দিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না লাখ লাখ মার্কিনি।

শনিবার পর্যন্ত চললে এই অচলাবস্থা হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম।

“চীনকেও দেখেছি। খোলামেলাভাবে বলি, চীন অনেক ক্ষেত্রেই কাঁদুনে চাক ও ন্যান্সির তুলনায় অনেক বেশি সম্মানীয়; আমার সত্যিই তাই মনে হয়,” বলেছেন ট্রাম্প।

অচলাবস্থা ও দেয়াল নির্মাণ ঘিরে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ২২ জানুয়ারি থেকে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে হতে যাওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যাওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল করেছেন।

পরিস্থিতি এখন যা, তাতে জরুরি অবস্থা জারি ছাড়া বিকল্পও দেখছেন না অনেকেই।

“জরুরি অবস্থা জারি করা ভুল হবে, কিন্তু তার (ট্রাম্প) লক্ষ্য পূরণে এখন সম্ভবত এ পথই খোলা,” বলেছেন ডেমোক্রেট সিনেটর জো মানচিন।

একই সুর শোনা গেছে ট্রাম্পঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের মুখেও।

“এখনকার চেয়ে বেশি কখনোই নিরাশ হইনি। সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনো পথই দেখছি না,” বলেছেন তিনি।