ঝড়টি এখন ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত ক্যারোলাইনার দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ হারিকেনের আঘাতে সমুদ্র তীরবর্তী শহরগুলোতে তাৎক্ষণিক বন্যা দেখা দেয়। ঝড়ের পূর্বাভাসের পরেও কয়েকটি স্থানে রয়ে যাওয়া মানুষেরা বন্যাকবলিত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ফ্লোরিডাসহ অ্যালাবামা ও জর্জিয়ার অসংখ্য বাড়িঘর।
বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফ্লোরিডার প্যানহ্যান্ডেলে আঘাত হানে হারিকেন মাইকেল। গাছ পড়ে সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, জর্জিয়ার সেমিনোল কাউন্টিতে ১১ বছরের একটি মেয়ে মারা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে যাওয়ার পথে মাইকেলের দ্রুত শক্তি অর্জন আবহাওয়াবিদদেরও বিস্মিত করেছে।
রোববার ক্রান্তীয় নিম্নচাপ হিসেবে যাত্রা শুরু করা ঝড়টি মঙ্গলবারই দুই মাত্রার হারিকেনে পরিণত হয়। বুধবার ঘণ্টায় ১৫৫ মাইল গতির বাতাস নিয়ে আঘাত হানার সময় এর মাত্রা ছিল পাঁচের প্রায় কাছাকাছি।
মাইকেলের নিয়ে আসা তীব্র বাতাসে গাছ উপড়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় এলাকার প্রায় আড়াই লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি কার্যালয়গুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
১৯৬৯ সালে মিসিসিপি ও ১৯৩৫ সালে লেবার ডে-তে ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়া ঝড়ের পর মাইকেলকেই যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রেকর্ড অনুযায়ী, এর আগে ফ্লোরিডার প্যানহ্যান্ডেলে চার মাত্রার কোনো ঝড় আঘাত হানেনি বলে জানিয়েছেন এনএইচসির আবহাওয়াবিদ ডেনিস ফেল্টজেন।
মাইকেলের তীব্র বাতাস ২০০১ এর আগের নির্মিত বাড়িগুলোর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন মার্কিন কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার পরিচালক ব্রুক লং।
ফ্লোরিডার মেক্সিকো বিচের কাছে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর দুইটার দিকে হারিকেনটি আঘাত হানে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আগেই ফ্লোরিডা, আলাবামা, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফ্লোরিডার কিছু কিছু অংশে ১৪ ফুট পর্যন্ত ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে এবং ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কারণে তাৎক্ষণিক বন্যা দেখা দিতে পারে বলেও আগেই সতর্ক করা হয়েছিল।
বুধবার রাতের দিকে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ে। বাতাসের গতি নেমে যায় ঘণ্টায় ৯০ মাইলে। বৃহস্পতিবার রাতের দিকে ফের শক্তি অর্জন করে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে শুক্রবার এটি পূর্ব উপকূল ছেড়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
একশ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হতে পারে শঙ্কার কথা জানিয়ে এর ‘অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির’ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি।
আলাবামায় টর্নেডোও আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা কর্মকর্তাদের। গত মাসে হারিকেন ফ্লোরেন্সে ভেসে যাওয়া ক্যারোলাইনায় ঝরতে পারে তুমুল বৃষ্টি।
মাইকেলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল রেখা বরাবর ৩০০ মাইলের বেশি এলাকা ঝুঁকির মুখে আছে বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।