মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইনের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সিনেটর ভিয়েতনাম যুদ্ধের সৈনিক জন ম্যাককেইন মারা গেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2018, 03:17 AM
Updated : 26 August 2018, 04:20 AM

তার দপ্তর থেকে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শনিবার ৮১ বছর বয়সী ম্যাককেইন যখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, পরিবারের সদস্যরা তার পাশেই ছিলেন।

তিন দশকের বেশি সময় ধরে অ্যারিজোনার সিনেটরের দায়িত্ব পালন করা ম্যাককেইন ২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী। বর্তমান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন বড় সমালোচক ছিলেন তিনি। 

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ম্যাককেইনের মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়লে তার চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু ম্যাককেইনের পরিবার শুক্রবার জানায়, তিনি আর চিকিৎসা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

টুইটারে এক বিবৃতিতে ম্যাককেইনের মেয়ে মেগান বলেন, “বাবাকে ছাড়া আগামী আমার দিনগুলো একরকম থাকবে না। তবে তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখেছে গেছেন, তাতে সেই দিনগুলো হবে ভালোবাসায় পূর্ণ।”

ম্যাককেইনের বাবা আর দাদা দুজনেই ছিলেন নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল। আর ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ম্যাককেইন নিজে ছিলেন একজন ফাইটার পাইলট।

বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ধরা পড়লে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় যুদ্ধবন্দি হিসেবে কারাগারে কাটাতে হয়েছিল ম্যাককেইনকে। সে সময় তিনি নির্যাতনেরও শিকার হয়েছিলেন।

তার মৃত্যুর খবরে শোক জানিয়ে অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন। ম্যাককেইন যার কড়া সমালোচক ছিলেন, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে প্রয়াত এই সিনটরের পরিবারের জন্য সমবেদনা ও শ্রদ্ধার কথা জানিয়েছেন। 

২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইনের সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন সারাহ পালিন।   

টুইটারে ম্যাককেইনের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার করে সারাহ পালিন তাকে বর্ণনা করেছেন একজন বন্ধু হিসেবে। লিখেছেন, বিশ্ব একজন ‘আসল আমেরিকানকে’ হারালো।

সেই নির্বাচনে ম্যাককেইনকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী বারাক ওবামা।

এক শোকবার্তায় সাবেক এই প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, সকল রাজনৈতিক মতপার্থক্যের পরও সেই আদর্শের জায়গায় তারা দুজনেই একমত ছিলেন, যে আদর্শের জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমেরিকানরা ‘লড়াই করেছে, আত্মোৎসর্গ করেছে’।

“জনকে একসময় যে ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তেমন অভিজ্ঞতা থাকা মানুষ আমাদের মধ্যে খুব বেশি নেই। যে সাহসিকতার পরিচয় তাকে দিতে হয়েছিল, তা আমাদের হয়নি।”

বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে থেকেও ম্যাককেইনের দীর্ঘ দিনের বন্ধু ছিলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

এক শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন আমেরিকার ওপর ম্যাককেইনের প্রভাব শেষ হয়ে যায়নি।

“কোনো কোনো সত্য চিরকালীন, জন ম্যাককেইনের জীবনই তার প্রমাণ। চারিত্রিক দৃঢ়তা, সাহস আর সততা… এই সত্যগুলো যে জীবন কাটিয়েছে, তার প্রভাব থেকে যায় বহুদিন। জন ম্যাককেইনের প্রভাবও অনেক দিন থাকবে।”