প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে মুগাবেকে তার দল সোমবার দুপুর পর্যন্ত সময় দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
তবে এর পরপরই জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান এক টানা ৩৭ বছর প্রেসিডেন্টের পদে থাকা মুগাবে।
রোববার জানু-পিএফ পার্টির বিশেষ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মুগাবেকে দলীয় প্রধানে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাওয়া তার স্থলাভিষিক্ত হন।
স্বাধীন হওয়ার পর গত ৩৭ বছর ধরে জিম্বাবুয়ে শাসন করছেন সাবেক এই গেরিলা নেতা। কিন্তু সম্প্রতি জানু-পিএফ পার্টির উত্তরসূরী নিয়ে দলের ভেতরে কোন্দল শুরু হয়।
এ মাসের শুরুর দিকে মুগাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দলীয় পদ থেকে এমারসন নানগাওয়াকে বহিষ্কার করেন। অথচ এই নানগাওয়াকে একসময় মুগাবের উত্তরসূরি বিবেচনা করা হত, তাকে বহিষ্কারের পর সে জায়গায় মুগাবের স্ত্রী গ্রেসের নাম চলে আসে।
এ নিয়ে দলীয় কোন্দলের মধ্যেই গত বুধবার সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় এবং মুগাবেকে গৃহবন্দি করে।
শুক্রবার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি জানু-পিএফ পার্টির পক্ষ থেকেও জনগণের কাছে জনপ্রিয়তা হারানো এই নেতাকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।
যদিও মুগাবের পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই বলে রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন তার এক আত্মীয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার জানু-পিএফ পার্টির বিশেষ কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে বসে এবং সেখানে মুগাবেকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসে।
মুগাবের স্থলাভিষিক্ত করা হয় তারই বহিষ্কার করা নেতা নানাগাওয়াকে। গ্রেস মুগাবেকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি মুগাবেকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য স্থানীয় সময় সোমবার দুপুর (জিএমটি ১০:০০) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। নতুবা অভিশংসনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে দেশকে স্বাধীন করে এক সময় পুরো মহাদেশে উপনিবেশ বিরোধী মুক্তির নায়কে পরিণত হয়েছিলেন ‘গ্র্যান্ড ওল্ড ম্যান’ মুগাবে।
এমনকি পাশ্চিমা দেশগুলোতেও তিনি ‘থিংকিং ম্যানস গেরিলা’ নামে পরিচিত ছিলেন।
কিন্তু ১৯৯০ সালের পর জিম্বাবুয়ের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে এবং দেশে তার বিরোধী মত তৈরি হতে থাকে।
ওই সময় মুগাবে দমন-পীড়নের মাধ্যমে তাদের থামাতে চেষ্টা করেন, যে কারণে নায়ক মুগাবে দিন দিন জনগণের চোখে খলনায়কে পরিণত হতে থাকেন।