ইউক্রেইনের ৪ অঞ্চলকে ভূখণ্ডভুক্ত করে নেওয়ার বিলে স্বাক্ষর পুতিনের

এর মাধ্যমে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক এবং খেরসন ও জাপোরিজিয়া অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে নিল রাশিয়া।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2022, 09:54 AM
Updated : 5 Oct 2022, 09:54 AM

দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক এবং খেরসন ও জাপোরিজিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করে নেওয়ার ৪টি চুক্তির বিলে স্বাক্ষর করে সেগুলোকে আইনে পরিণত করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এর মাধ্যমে রাশিয়া ওই চার অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়ার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করল।

বুধবার পুতিনের স্বাক্ষরের আগে এই ৪ চুক্তির বিল রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের সর্বসম্মত সমর্থন লাভ করে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটি।

সোমবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অনুমোদন পাওয়ার আগে ৪টি চুক্তি রাশিয়ার সাংবিধানিক আদালতে বৈধ হিসেবেও স্বীকৃত হয়।

রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রশ্নে গত ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর হওয়া গণভোটে মস্কোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে বাসিন্দাদের ব্যাপক সায় পাওয়ার পর পুতিন ও ইউক্রেইনের ৪ অঞ্চলের মস্কোপন্থি প্রশাসনের প্রধানরা শুক্রবার এই ৪ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। 

কিইভ ও এর পশ্চিমা মিত্ররা এসব গণভোটকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা কখনোই ভোটের ফল এবং ৪ অঞ্চলের রাশিয়াভুক্তি মেনে নেবে না।

আরটি লিখেছে, ময়দান বিপ্লব ও এরপর ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় তার ফলশ্রুতিতে ২০১৪ সালেই দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) ইউক্রেইন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আর চলতি বছর ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান শুরুর অল্পদিনের মধ্যেই রুশ বাহিনী সমগ্র খেরসন অঞ্চল ও জাপোরিজিয়ার সিংহভাগ অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়।

ইউক্রেইন রাষ্ট্রের ভেতরে রেখেই দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সম্বলিত মিনস্ক চুক্তি বাস্তবায়নে কিইভ ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া প্রতিবেশী দেশটিতে সামরিক অভিযান চালাতে সেনা পাঠায়।

২০১৪ সালে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ওই মিনস্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

ওই চুক্তির মাধ্যমে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে কাজে লাগিয়ে সময়ক্ষেপণ এবং ‘শক্তিশালী সামরিক বাহিনী’ বানানোই কিইভের মূল লক্ষ্য ছিল বলে পরে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট পিয়তর পোরোশেঙ্কো স্বীকারও করে নেন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্রেমলিন দনবাসের দুই প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ইউক্রেইন কখনোই পশ্চিমা কোনো সামরিক জোটে যাবে না এমন নিশ্চয়তার মাধ্যমে নিজেদের নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেবে, এই দাবি তোলে।

কিইভকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো থেকে দূরে রাখতে, দনবাসসহ ইউক্রেইনের বিভিন্ন অঞ্চলের জাতিগত রুশ বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং ইউক্রেইনকে নয়া-নাৎসিমুক্ত করতে মস্কো ইউক্রেইনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর কথা জানায়।

তবে কিইভ ও এর মিত্ররা একে যুদ্ধই বলছে। রাশিয়া বিনা উসকানিতে এই যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে বলেও ভাষ্য তাদের।

আরও পড়ুন:

Also Read: খেরসনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রাম পুনরুদ্ধার ইউক্রেইনের