বয়স ১৪ বছরের কম হলে সোশাল মিডিয়া নিষিদ্ধ ফ্লোরিডায়

এমনকি ১৪ ও ১৫ বছর বয়সীদের ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো প্ল্যাটফর্ম চালানোর ক্ষেত্রেও অভিভাবকের সম্মতি নেওয়ার শর্ত রয়েছে নতুন আইনে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2024, 09:22 AM
Updated : 26 March 2024, 09:22 AM

১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশের সুবিধা বন্ধ করছে মার্কিন অঙ্গরাজ্য ফ্লোরিডা।

নতুন এই আইনে স্বাক্ষর করেছেন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস, যেখানে ১৪ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিকে।

এমনকি ১৪ ও ১৫ বছর বয়সীদের ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অভিভাবকের সম্মতি নেওয়ার শর্ত রয়েছে নতুন আইনে।

আর যেসব কোম্পানি অ্যাকাউন্ট মুছতে ব্যর্থ হবে, তাদের বিরুদ্ধে মামলার ঝুঁকিও থাকবে নতুন এ আইনে, যেখানে ভুক্তভোগী শিশুর জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রয়েছে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত। আর আইনের প্রতিটি লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা হতে পারে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত।

আইনটি কার্যকর হবে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে। তবে, এটি মার্কিন সংবিধানকে লঙ্ঘন করে, বিভিন্ন কোম্পানির এমন দাবি করার সম্ভাবনা আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

অঙ্গরাজ্যটির রিপাবলিকান স্পিকার পল রেইনার বিলটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘মস্তিষ্ক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাওয়া শিশুর জানার সক্ষমতা নেই যে, সে এ ধরনের আসক্তিমূলক প্রযুক্তির সংস্পর্শে চলে আসছে’।

বিলটিতে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে উল্লেখ রয়েছে বিভিন্ন এমন কনটেন্টের কথা, যেখানে ‘অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সহায়ক সাহিত্যিক, শৈল্পিক, রাজনৈতিক বা বৈজ্ঞানিক মূল্যবোধ’ নেই। এ ছাড়া, ‘যৌনাচার ও অশ্লীলতার মতো আপত্তিকর’ দৃশ্য ধারণ করা কনটেন্টের কথাও উল্লেখ রয়েছে এতে।

যেসব কোম্পানি এ ধরনের কনটেন্ট সরাতে ব্যর্থ হবে, বা তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনও অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুকে নিজস্ব সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশাধিকার দেওয়ার অভিযোগ এলে, তারা এর জন্য দায়ী থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে বাদীপক্ষের আদালতের খরচ ও অ্যাটর্নি ফি’র একাংশ দেওয়ার বিষয়টিও।

গভর্নর রন ডিস্যান্টিস বলেন, ‘আমার মনে হয়, বিলটি সন্তোষজনক, যেখানে আইন ও সংবিধানের ন্যায্য প্রয়োগ দেখা যাবে।’

‘আমরা তাদেরকে হারিয়ে দেব’

আইনটিতে স্বাক্ষর করার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কোম্পানিগুলো যে মামলা করবে, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল রেইনার। তবে তিনি বলেন, “আমরা তাদেরকে হারিয়ে দেব। আমরা হারাবই। আর আমরা কখনওই থেমে যাব না।”

এদিকে, সম্প্রতি রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতা হারানো ডিস্যান্টিসও বিলটিতে সমর্থন দিয়ে বলেন, “এটা শুধু আমাকেই সন্তুষ্ট করেনি, বরং সবাইকে করেছে। আমি মনে করি, এটা আইন ও সংবিধানের ন্যায্য প্রয়োগ।”

মেটা, টিকটক ও এক্স-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বাণিজ্য সংগঠন নেটচয়েসের দাবি, ফ্লোরিডার এমন নীতিমালা ‘ইন্টারনেটের জন্য একটি পরিচয়পত্র’ তৈরি করে। আর বয়স যাই হোক না কেন, ফ্লোরিডার সকল নাগরিকের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা বর্তাবে।

“গভর্নর ডিস্যান্টিস এতে স্বাক্ষর করায় আমরা হতাশ,” এক বিবৃতিতে বলেন নেটচয়েসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শীর্ষ আইনজীবী কার্ল এসজাবো।

“ফ্লোরিডার নাগরিক ও তাদের পরিবারের অনলাইন ডেটা সুরক্ষিত রাখার এর চেয়েও ভালো উপায় আছে, যেখানে তাদের স্বাধীনতাও লঙ্ঘন হবে না।”