আমি প্রেসিডেন্ট হলে চীন-তাইওয়ান যুদ্ধ হবে না: ফক্সকন প্রতিষ্ঠাতা

“তাইওয়ানে আক্রমণ চালানো চীনের কাছে অগ্রাধিকার নয়। তবে তাইওয়ানের রাজনীতিবিদের আশা এমন, কারণ এতে চীনের প্রতি ঘৃণা বাড়বে আর তারা ভোট পাবেন।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2023, 08:40 AM
Updated : 27 April 2023, 08:40 AM

তাইওয়ানভিত্তিক কোম্পানি ফক্সকনের ধনকুবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতা প্রত্যাশী টেরি গউ বলেন, এই দ্বীপে চীন যুদ্ধ করতে চায় না। 

টেরির বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে আরও উঠে আসে, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে চীন আক্রমণ চালাবে না। তার নিজের পক্ষ থেকে তাইওয়ানের স্বাধীনতার ঘোষণা না দেওয়াকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে তাইপেই ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবির লক্ষ্যে চীন দ্বীপরাষ্ট্রটির কাছাকাছি জায়গায় নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়েছে। তবে, তাইওয়ানের গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার এটি প্রত্যাখ্যান করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

“আমার অনুমান বলছে, তারা যুদ্ধ চায় না। তবে আপনি যদি স্বাধীনতা চাওয়ার মতো কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন, আর স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টা করেন, তাহলে অবশ্যই যুদ্ধ হবে। তারা মনে করে, তাইওয়ান তাদের।” --তাইওয়ানের ‘তুংঘাই ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষাবীদ ও শিক্ষার্থীদের বলেন গউ।

২০১৯ সালে অ্যাপলের চীনা অংশের উৎপাদক কোম্পানি ফক্সকনের প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে আসেন তাইওয়ানের অন্যতম পরিচিত মুখ হিসেবে বিবেচিত গউ।

এই মাসে দ্বিতীয় দফায় তাইওয়ানের বিরোধী দল ‘কুওমিনতাং (কেএমটি)’র পক্ষে প্রেসিডেট নির্বাচনের প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ঐতিহ্যগতভাবেই বেইজিংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এই রাজনৈতিক দলের।

গউ বলেন, চীন নিজেদের অর্থনীতি উন্নত করতে চাওয়ার পাশাপাশি কলেজ স্নাতকদের জন্য চাকরি খোঁজা ও নিজ জনগণের খাদ্য নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো নিয়ে মনযোগ দিতে চেয়েছে।

“তাইওয়ানে আক্রমণ চালানো চীনের কাছে অগ্রাধিকার নয়। তবে তাইওয়ানের রাজনীতিবিদের আশা এমন, কারণ এতে চীনের প্রতি ঘৃণা বাড়বে আর তারা ভোট পাবেন।” --যোগ করেন ৭২ বছর বয়সী গউ।

“আমি স্বাধীনতার (ঘোষণা) দেব না, তোমরা আমাকে আক্রমণও করবে না বা তাইওয়ানের আশপাশে যুদ্ধবিমানও ওড়াবে না।” --চীনের বিমান বাহিনীর দ্বীপরাষ্ট্রটিতে প্রায় নিয়মিতই অভিযান পরিচালনা সম্পর্কে বলেন তিনি।

গউ বলেন, তিনি ‘মর্যাদার সঙ্গে শান্তি’ চান। আর তিনি সমঅধিকারের ভিত্তিতে কথা বলেন। এ ছাড়া, তাইওয়ানকে একটি ‘বিপজ্জনক টাইম বোমা’ হিসেবে তুলে ধরায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেরও ব্যপক সমালোচনা করেন তিনি।

“আপনি কী মনে করেন এটা বিপজ্জনক?” --দর্শকদের কাছ থেকে হাস্যকর প্রতিক্রিয়া পেতে জিজ্ঞেস করেন তিনি।

দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পর সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ​​ইং-ওয়েন আর নির্বাচনে দাঁড়াতে পারছেন না।

তার ক্ষমতাসীন ‘ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)’ বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই’কে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে।

তবে, এখনও নিজেদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করেনি কেএমটি।

সাই বেশ কয়েকবার চীনের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলেও বেইজিংয়ের কাছে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হয়।

সাই ও লাই দুইজনই অবশ্য বলছেন, কেবল তাইওয়ানের জনগণই নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন।