অফিস থেকে সরছে টিমস, কিন্তু এতে কি মুক্তি মিলবে মাইক্রোসফটের?

| ছবি: রয়টার্স

চ্যাটিং ও ভিডিও কল করার অ্যাপ টিমসকে মাইক্রোসফট তাদের অফিস প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দিয়ে কোম্পানিটির সফটওয়্যারে প্রতিযোগীদের জন্য সুযোগ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। তবে এত অল্পতেই সেই মোক্ষ লাভ হবে না বলেই প্রতিক্রিয়া এসেছে।

ইইউ অ্যান্টিট্রাস্ট কমিশনের সম্ভব্য জরিমানা এড়াতে মাইক্রোসফটের এটুকু করাই যথেষ্ট হবে না বলে মন্তব্য করেছে বাজারে কোম্পানিটির প্রতিযোগীরা।

মাইক্রোসফটের অফিসে টিমসের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সেলসফোর্স মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপ স্ল্যাক ২০২০ সালে  অভিযোগ করে ইউরোপীয় কমিশনের কাছে। সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হওয়ার এক মাস পর এই পরিবর্তনের ঘোষণা দিল মাইক্রোসফট। 

ঘোষিত এই পরিবতর্নের কথা আগেভাগেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বলেও তাদের মনযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি কোম্পানিটি। ইইউ প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ কোম্পানির ঘোষণাটিকে আমলে নেওয়ার কথা বললেও আর কোনো মন্তব্য করেনি।

এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নিলে এই বছর শরতে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেবে কমিশন, গত মাসে রয়টার্সকে এমনটা জানিয়েছেন বিষয়টির সঙ্গে অবগত এক সূত্র।

অফিস ৩৬৫-এর সঙ্গে টিমসকে বিনামুল্যে ব্যবহারের জন্য ২০১৭ সালে জুড়ে দেয় কোম্পানিটি। ফলে এটি স্কাইপকে প্রতিস্থাপন করে এবং কোভিড মহামারীর সময়ে ভিডিও কনফারেন্সে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। 

এই পরিবর্তনকে “দৃষ্টান্তমূলক’ বলে বর্ণনা করে মাইক্রোসফটের ইউরোপীয় সরকার বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট নান্না-লুইস লিন্ডি একটি ব্লগপোস্টে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তদন্ত চলাকালে কোম্পানিটি “পূর্ণ সহযোগিতা” করবে।

দুটি আপত্তির ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তনগুলো আনার কথা বলেন তিনি। “টিমসসহ বিজনেস স্যুটের চেয়ে টিমসবিহীন সংস্করণ কম মূল্যে পাওয়া যাবে। আর, মাইক্রোসফট ৩৬৫ এবং অফিস ৩৬৫ স্যুটসে প্রতিদ্বন্দীদের জন্য আরও সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে আমাদের।”

১ অক্টোবর থেকে এই পরিবর্তন কার্যকর হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সুইজারল্যান্ডে। সেখানকার মাইক্রোসফটের এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকদের জন্য টিমসবিহীন অফিস সংস্করণের দাম হবে দুই ইউরো কম। অন্যদিকে মাসিক পাঁচ ইউরোর বিনিময়ে আলাদাভাবে টিমস ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।

গ্রাহক এবং স্বাধীন সফটওয়্যার সরবরাহকারীদের মধ্যে  যারা টিমস থেকে ডেটা মুছে ফেলে অন্য পণ্যে ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য নতুন ব্যবস্থাও আসবে।

স্ল্যাকের মালিক সেলসফোর্স বলছে তাতে কিছুই বদলাবে না। প্রতিদ্বন্দীরা বলেছে, মাইক্রোসফটের এই নতুন ব্যবস্থা তাদেরকে ইইউ অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রকদের কাছ থেকে ছাড় দেবে না – এমন মন্তব্য উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

“এটা গ্যালারিতে বসে কারসাজি দেখানোর মতো। আমার মনে হয় না কমিশনের এতে মন গলবে। এই আত্মত্যাগে কিছু আসবে যাবে না।” বলেছে ইন্ডাস্ট্রির একটি সূত্র।

গত এক দশকে ইইউ অ্যান্টিট্রাস্ট কমিশনে মাইক্রোসফটের দেওয়া মোট জরিমানা ছিলল দুশো ৪০ কোটি ডলার। এরপর থেকেই নিয়ন্ত্রকদের সমঝে চলার চেষ্টা করছে কোম্পানিটি।