ব্যবহারকারীর মানসিক সুস্থতায় প্রভাব ফেলে এক্স: গবেষণা

এক্স নিজে এই ধরনের প্রভাবের মূল কারণ নয়, বরং ব্যবহারকারী কীভাবে এটি ব্যবহার করছেন ও প্লাটফর্মে তার লগ ইন করার প্রাথমিক কারণ কী, সে বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2024, 09:40 AM
Updated : 18 March 2024, 09:40 AM

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর ব্যবহার ব্যবহারকারীর মধ্যে ক্ষোভ, রাজনৈতিক মেরুকরণ, একঘেয়েমি’সহ নানা নেতিবাচক আবেগের মিশ্রণ ঘটাতে পারে। নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে এর বিস্তারিত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স ব্যবহারের মানসিক ক্ষতির দিকটির ওপর আলোকপাত করেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র গবেষকরা।

বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এর ‘কমিউনিকেশনস সাইকোলজি’ শাখায় প্রকাশিত ওই গবেষণায় যেখানে ব্যবহারকারীদের ভাল থাকার ওপর এই প্ল্যাটফর্মের প্রভাব উঠে এসেছে।

তবে, সরাসরি এক্স কে দায়ী করেননি গবেষকরা। তারা বলছেন, এক্স নিজে এই ধরনের প্রভাবের মূল কারণ নয়, বরং ব্যবহারকারী কীভাবে এটি ব্যবহার করছেন ও প্লাটফর্মে তার লগ ইন করার প্রাথমিক কারণ কী, সে বিষয়গুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে।

এ গবেষণায় ২৫২ জন বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মার্কিন ব্যবহারকারীর মানসিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়, যেখানে মনযোগ দেওয়া হয়েছে এক্স ব্যবহার করার সময় ব্যবহারকারীর তাৎক্ষণিকভাবে অনুভূত মানসিক অবস্থার পরিবর্তনের ওপর।

গবেষণায় একটি ধারাবাহিক প্যাটার্ন তুলে ধরা হয়েছে, সেটি হল, ব্যবহারকারীরা অনেক সময়ই প্লাটফর্মে নিজের গুরুত্ব বাড়তে দেখেছেন। তবে, এতে করে তাদের ইতিবাচক অনুভূতি কমতে ও নেতিবাচক অনুভূতি বাড়তেও দেখা গেছে।

তবে মজার বিষয় হল, এক্স ব্যবহারে ব্যবহারকারীর সামগ্রিক সুস্থতার ওপর সরাসরি কোনো ইতিবাচক প্রভাবও খুঁজে পাওয়া যায়নি এ গবেষণায়।

গবেষণায় দেখা যায়, এক্স ব্যবহার করার মানসিক প্রভাব অনেক বেশি পরিবর্তিত হয়েছে ব্যবহারকারীদের অনুপ্রেরণার উপর ভিত্তি করে। আর যারা বাস্তব বিশ্বের সমস্যা থেকে পালাতে চান, তাদের সার্বিক সুস্থতার মাত্রা কম হওয়ার পাশাপাশি তাদের রাগ ও অসুখী হওয়ার ঝুঁকিও বেশি ছিল।

এদিকে, উচ্চ মাত্রার একঘেমি নিয়েও ঘন ঘন অভিযোগ এসেছে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে। বিশেষ করে ফিড স্ক্রল করার ক্ষেত্রে, যা এক্স এর সবচেয়ে সাধারণ কাজ। আর ব্যবহারকারীর সুস্থতা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এটি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

এই গবেষণায় পরীক্ষিত আরেকটি দিক ছিল রাজনৈতিক মেরুকরণ, যেখানে রাজনৈতিকভাবে মেরুপ্রবণ ব্যক্তিদের মধ্যে এক্স-এ রিটুইট করার প্রবণতা বেশি।

অবাক করার মতো বিষয় হল– বিনোদন ও তথ্যসন্ধানের উদ্দেশ্যে এক্স ব্যবহারের বিষয়টিও রাগ ও মেরুকরণের অনুভূতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

এর বিপরীতে, যেসব ব্যবহারকারী টুইটের রিপ্লাই দেওয়া ও অন্যদের প্রোফাইল খোঁজার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছেন, তাদের মধ্যে ইতিবাচক অনুভূতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, ব্যবহারকারীরা অর্থপূর্ণ উপায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকলে এর নেতিবাচক প্রভাব কমে আসতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ও ব্যবহারকারীদের মানসিক সুস্থতার মধ্যে যে জটিল সম্পর্ক, তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এ গবেষণার ফলাফলে। আর অনলাইনে আচরণের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর ইচ্ছার গুরুত্বও ফুটে ওঠে এতে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিবর্তিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের চেয়ে স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রভাবিত করার মতো খুঁটিনাটি বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।