সুবিধা মিললেও এতে ব্যক্তিগত ছবি এবং আর্থিক তথ্য ব্যবহার করার বিষয়টি জড়িয়ে আছে, যা মানুষকে এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত করতে পারে।
Published : 30 Aug 2024, 11:59 AM
বিভিন্ন ধরনের দোকান, হোটেল ও নানা সরকারি পরিষেবায় ‘ফেইশল রেকগনিশন পেমেন্ট প্রযুক্তি বা এফআরপিটি’ প্রতিনিয়ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
জনপ্রিয়তা বাড়লেও অর্থ দেওয়ার এই নতুন পদ্ধতিটি কি সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করেন বা এই প্রযুক্তির জন্য সবাই কি এখনই প্রস্তুত? গবেষকরা বলছেন ‘সম্ভবত না’।
বিভিন্ন ধরনের গ্রোসারি বা সুপার শপে অর্থ দেওয়ার জন্য এই নতুন প্রযুক্তির আওতায় নিজেদের মুখ ব্যবহার করতে মানুষরা কতটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন— সম্প্রতি তা খুঁজে দেখেছেন ‘কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (কিউইউটি)’র গবেষকরা।
নতুন ধরনের এক বায়োমেট্রিক পেমেন্ট সিস্টেম ‘এফআরপিটি’, যেখানে দাতার মুখকে ব্যবহার করা হয় ‘পাসওয়ার্ড’ হিসাবে।
ড. শাশা ওয়াং, অধ্যাপক গ্যারি মর্টিমার ও অধ্যাপক বায়রন কেটিংয়ের নেতৃত্বে এই গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে ‘জার্নাল অব রিটেইলিং অ্যান্ড কনজিউমার সার্ভিসেস’-এ।
‘এফআরপিটি’ সম্পর্কে মানুষরা কীভাবে ভাবেন তা এ গবেষণায় খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা। দেখা গেছে, কিছু ক্রেতা এ প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করলেও বেশিরভাগ ক্রেতাই এ পদ্ধটির প্রাইভেসি, সুরক্ষা ও অতিরিক্ত ব্যয়ের সম্ভাবনা নিয়ে এখনও উদ্বিগ্ন।
সুবিধা মিললেও এতে ব্যক্তিগত ছবি এবং আর্থিক তথ্য ব্যবহারের বিষয়টি জড়িয়ে আছে, যা মানুষকে এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত করতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
ড. ওয়াং বলেছেন, এ প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। এমনকি ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে এফআরপিটি’র বাজার মূল্য ছিল ৪.৬২ বিলিয়ন ডলার। আর এই বাজার মূল্য বাড়তে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২২ সালে চীনে ৭৬ কোটিরও বেশি মানুষের এফআরপিটি ব্যবহারের বিষয়টি।
আগে করা হয়েছে এমন গবেষণার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক পর্যালোচনা করেন কিউইউটি’র গবেষকরা। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান ক্রেতারা নিজেদের এফআরপিটি ব্যবহার থেকে কীভাবে অনুপ্রাণিত বা নিরুৎসাহিত হন তা বোঝার জন্য ক্রেতাদের সাক্ষাৎকার নেন তারা।
এক্ষেত্রে গবেষকরা দেখেন, কিছু শর্ত পূরণ হলে অনেক মানুষ এফআরপিটি প্রযুক্তিটি যাচাই করে দেখতে চান।
অধ্যাপক মর্টিমার বলেছেন, ক্রেতারা যদি বিশ্বাস করেন এ প্রযুক্তিটি কেনাকাটার বিষয়টিকে সহজ করে তুলবে তবে তাদের পক্ষে এটি গ্রহণ করার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে। এমনকি দোকানের খুচরা বিক্রেতাকে বিশ্বাস করেও এটির ব্যবহার বাড়াতে পারেন ক্রেতারা।
প্রযুক্তিটি কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য দেওয়ার মাধ্যমে এবং এটি ব্যবহার করলে পণ্য কেনায় ছাড়ের মতো ব্যবস্থা রাখলেও ক্রেতারা এ প্রযুক্তিটি ব্যবহার করতে পারেন।
তবে ক্রেতারা যদি খুচরা বিক্রেতাকে ভালভাবে না চেনেন বা জানেন ও এ প্রযুক্তিটিকে দরকারি হিসাবে না দেখেন বা ‘ট্যাপ-অ্যান্ড-গো’ অর্থাৎ ডিজিটাল পেমেন্টের মতো নিজেদের বর্তমান অর্থ দেওয়ার পদ্ধতিতে খুশি হন তবে ক্রেতাদের এফআরপিটি ব্যবহারের সম্ভাবনা কম।
ক্রেতাদের মধ্যে একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হল– এফআরপিটি ব্যবহারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ব্যয় হতে পারে। এক্ষেত্রে গবেষকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি কীভাবে তাদের ‘ট্যাপ-অ্যান্ড-গো পেমেন্ট’-এর লিমিট সেট করার মতো ব্যয়ের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে পৌঁছে গেলে ‘সতর্কতামূলক প্রম্পট’ যুক্ত করে এটি ঠেকানো যেতে পারে।