“এনভিডিয়ার সবচেয়ে উন্নত ও সর্বোচ্চ প্রসেসিং ক্ষমতাওয়ালা এআই চিপ চীনে বিক্রির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। সেগুলো চীনের সম্মুখসারির এআই মডেল প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হবে।”
Published : 12 Dec 2023, 05:57 PM
অনুমোদিত বিভিন্ন এআই চিপ চীনে বিক্রি করার বিষয়ে চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছে বাইডেন প্রশাসন। তবে, এ আলোচনায় ফের গুরুত্ব পেয়েছে বিভিন্ন চীনা কোম্পানির কাছে এনভিডিয়ার সবচেয়ে আধুনিক চিপ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও।
সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো বলেন, এনভিডিয়া চীনের কাছে এআই চিপ বিক্রি ‘করতে পারে, করবে ও তাদের করাও উচিৎ’। কারণ, কোম্পানিটির বেশিরভাগ এআই চিপই তৈরি করা হয়েছে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে।
“তবে, এনভিডিয়ার সবচেয়ে উন্নত ও সর্বোচ্চ প্রসেসিং ক্ষমতাওয়ালা এআই চিপ বিক্রির অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সেগুলো চীনের সম্মুখসারির এআই মডেল প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হবে।” -- যোগ করেন রাইমন্ডো।
রাইমন্ডো আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগে এনভিডিয়ার সিইও জেনসেং হুয়াংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সে আলোচনায় হুয়াং পরিষ্কারভাবে বলেছেন, “আমরা নিয়ম ভাঙতে চাই না। আমাদেরকে নিয়মগুলো জানান, আমরা আপনাদের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে কাজ করব।”
গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফোরামে বিভিন্ন এআই চিপ নির্মাতা কোম্পানির কাছে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন রাইমন্ডো। সে বার্তায় তিনি বলেন, মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি ‘মানদণ্ড’ বানিয়েছে, যেখানে ওই মানদণ্ডের ‘কাছাকাছি মানের’ চিপ তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এনভিডিয়ার মতো কোম্পানিগুলোকে।
“এটা মোটেও উৎপাদনবান্ধব নয়।,” --বলেন রাইমন্ডো।
“আমি সতর্ক করছি, কেউ যদি মানদণ্ডের মধ্যে এমন চিপ নকশা করে, যেখানে এআই ব্যবহারের সুবিধা আছে, তবে আমি পরদিন থেকেই তা নিয়ন্ত্রণ করবো।”
সোমবার রাইমন্ডো বলেন, এ বিষয়ে এনভিডিয়ার সঙ্গে কাজ করছে তার মন্ত্রণালয়।
“এনভিডিয়া সঠিক কাজই করতে চায়, যার মধ্যে যত বেশি সম্ভব চিপ বিক্রির বিষয়টিও রয়েছে।”
এ বিষয়ে রয়টার্সকে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এনভিডিয়া। তবে, গত সপ্তাহে হুয়াং বলেন, মার্কিন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ও যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা মেনেই চীনা বাজারের জন্য চিপ তৈরি করছে তার কোম্পানি।
রাইমন্ডো আরও বলেন, চীনের বাণিজ্যিক বিষয়াদির জন্য অগাস্টে কোম্পানির গঠিত আলাদা দলটি কাজ শুরু করেছে কি না, তা এখনই বলা কঠিন।
গত নভেম্বরে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাস্টারকার্ডের একটি যৌথ উদ্যোগের লাইসেন্স মঞ্জুর করার পাশাপাশি চিপ নির্মাতা মার্কিন কোম্পানি ব্রডকমের ছয় হাজার ৯০০ কোটি ডলারের ক্লাউড -কম্পিউটিং কোম্পানি ভিএমওয়্যার অধিগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে। রাইমন্ডো এটিকে ‘সঠিক দিকে ছোট ছোট পদক্ষেপ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, চীনের এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো বোয়িংয়ের তৈরি অ্যারোপ্লেন কেনা পুনরায় শুরু না করায় তিনি হতাশ। বোয়িংয়ের দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনার পর চার বছরের বেশি সময় ধরে বোয়িংয়ের ‘৭৩৭ ম্যাক্স’ প্লেন কেনা বন্ধ রেখেছে চীনা কোম্পানিগুলো। এ বিষয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বোয়িং।
রাইমন্ডো বলেন, গত মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকেও এ কথা তুলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
“আমরা এ বিষয়ে চাপ দেওয়া অব্যাহত রাখব।” --বলেন রাইমন্ডো।
“তারা এ প্রতিশ্রুতি রাখবে না, এর কোনো কারণই নেই।”
এ ছাড়া, টিকটকের মতো বিদেশি অ্যাপে সম্ভাব্য জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসকে পুনরায় নতুন আইন পাশ করার আহ্বানও জানান রাইমন্ডো। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইনগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো যথেষ্ট নয়।
“আমাদের নতুন ব্যবস্থা দরকার।”
“আর কেবল টিকটকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয় নয় এটি। সঙ্গত কারণেই অন্যান্য বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর নাম নিতে চাচ্ছি না। আজ আমরা হয়ত টিকটকের কথা বলছি, তবে ভবিষ্যতে তাদের জায়গায় কে হতে পারে, তা কেউই জানে না।”