ইন্দোনেশীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট ‘গোটু’র সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে সামাজিক মাধ্যম টিকটক। এ চুক্তির মাধ্যমে দেশটির অনলাইন শপিং ব্যবসায় পুনরায় প্রবেশ করতে যাচ্ছে চীনা মালিকানাধীন কোম্পানিটি।
বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ‘টোকোপিডিয়া’য় দেড়শ কোটি ডলার আর্থিক বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে টিকটকের মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্স।
অক্টোবরে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত ইন্দোনেশিয়ার নতুন নীতিমালা মানতে নিজেদের ‘টিকটক শপ’ বন্ধ করতে বাধ্য হয় টিকটক।
ইন্দোনেশিয়ায় টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ কোটি।
এ চুক্তির অধীনে টিকটক টোকোপিডিয়ার ৭৫ শতাংশ কিনে নেবে ও এর সঙ্গে টিকটক শপের ইন্দোনেশিয়া অংশের ব্যবসাকে সম্পৃক্ত করবে।
“এ কৌশলগত চুক্তি হবে প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রকদের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে।” --এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে কোম্পানি দুটি।
কোম্পানিগুলো আরও বলেছে, তারা নিজ নিজ প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ইন্দোনেশীয় পণ্য প্রচার করার পাশাপাশি দেশটির ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসাগুলোর উৎপাদন ও বিক্রির পরিকল্পনায় সহায়তা দেবে।
ছোট বিক্রেতা ও ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষার লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অনলাইন শপিং নিষিদ্ধ করেছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার। এর পরপরই এ চুক্তি এল।
ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটির বেশি মানুষ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। আর অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা জারির আগে টিকটকের সবচেয়ে বড় অনলাইন বাজারও ছিল দেশটি।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়ার আগে সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো বলেন, “ই-কমার্স খাত নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ। নীতিমালা থাকলে এটা খুবই ভাল। তবে, কোনো নীতিমালা থাকলে এটা খুবই বাজে রূপ নিতে পারে।”
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন শপিং খাতে বড় উত্থান দেখা গেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার ই-কমার্স খাতে বিক্রি ছয় গুণের বেশি বেড়ে এর পরের বছর গিয়ে পৌঁছেছে চার হাজার চারশ কোটি ডলারে।
এদিকে, উন্মোচনের দুই বছরের মধ্যেই ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন শপিং বাজারে চাহিদা বেড়েছে টিকটক শপের, যেখানে রাজত্ব করছে টোকোপিডিয়া, শপি ও লাজাডা’র মতো প্ল্যাটফর্মগুলো।
ইন্দোনেশিয়ায় জারি করা নীতিমালা টিকটকের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা ছিল। কারণ, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যে তদন্তের মুখে পড়েছিল চীনা মালিকানাধীন কোম্পানিটি, যেখানে নিজ দেশের সরকারি ডিভাইসে অ্যাপটি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট।