‘পেলে যে কোনো যুগেই সফল হতেন’

ফুটবলের জন্য পেলে যা করেছেন তা সব সময়ই টিকে থাকবে, বলেছেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গুয়ার্দিওলা।

ইংলিশ গ্রেট গ্যারি লিনেকার ছোট্ট একটা ভিডিও তার টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন। যেখানে সব সময়ের সেরার তালিকায় থাকতে পারেন, এমন সব জাদুকরী ফুটবলারের কিছু ক্লিপ দেখানো হয়েছে। সেগুলো মৌলিক কিছু নয়, বরং পেলের দুর্দান্ত সব নৈপুণ্যের পুনরাবৃত্তি মাত্র! ফুটবল জাদুকরের এই সামর্থ্যের জন্যই হয়তো পেপ গুয়ার্দিওলা মনে করেন, যে কোনো যুগে সফল হতে পারতেন পেলে।

কে নেই সেই ভিডিও ক্লিপে, দিয়েগো মারাদোনা, ইয়োহান ক্রুইফ, জিনেদিন জিদান থেকে শুরু করে লিওনেল মেসি, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, নেইমার থেকে হালের কিলিয়ান এমবাপে! তাদের যে কারিকুরিতে মন্ত্রমুগ্ধ ফুটবল বিশ্ব সেগুলো কত অনায়াসে দিনের পর দিন, ম্যাচের পর ম্যাচে দেখিয়ে গেছেন পেলে।  

পেলের খেলা সরাসরি কিংবা টিভিতে যারা দেখেছেন তারা সব সময়ই তাকে সেরা মানেন। তাদের কাছে পেলেই ফুটবলের শেষ কথা। অন্যদের লড়াই তার কাছে যাওয়ার।

ফুটবল জাদুকরের খেলা দেখা হয়নি গুয়ার্দিওলারও। তবে বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখেছিলেন, সেগুলো থেকেই বুঝে গিয়েছিলেন কোন উচ্চতার খেলোয়াড় ছিলেন ব্রাজিলিয়ান মহানায়ক।

এভারটনের বিপক্ষে শনিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে খেলবে ম্যানচেস্টার সিটি। এর আগের দিন সংবাদ সম্মলেনে পেলের মৃত্যুতে গভীর শোক জানান কোচ গুয়ার্দিওলা।

“ম্যানচেস্টার সিটির পক্ষ থেকে তার পরিবারের প্রতি গভীর শোক। ফুটবল আজকের ফুটবল হয়ে উঠেছে এই ধরনের ব্যক্তি, খেলোয়াড় ও মানুষের জন্য।”

“আমার মনে হয়, নেইমার কথাটা বলেছে, এর আগে ১০ কেবলই একটি সংখ্যা ছিল, (পেলে এই নম্বরের জার্সি পরার) পরে এটা হয়ে গেছে বিশেষ। সব সেরা খেলোয়াড় তাদের দলের হয়ে এটা পরতে চায়। তিনি ফুটবলের জন্য যা করেছেন, তা সব সময়ই টিকে থাকবে।”  

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে অনেক দিন ধরেই কোচ হিসেবে কাজ করছেন গুয়ার্দিওলা। লম্বা সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি নিশ্চিত, যেকোনো যুগে পাঠানো হলেও সাফল্য পেতেন পেলে।

“তিনি কেবল তিনটি বিশ্বকাপ জেতেননি- তিনি যখন এলেন সেটা ছিল ফুটবলে নতুন কিছু। তিনি যখন খেলতেন, তখন আমার জন্মই হয়নি। তবে এটা খুব ভালো সিনেমার মতো, তাই না? তার লেগাসি এত বছর পরেও অক্ষয়।”

“আমার বয়স যখন নয় কিংবা দশ, তখন আমি তার কিছু ক্লিপ দেখতে শুরু করি। এখন আমি বুঝতে পারি তিনি এত শক্তিশালী ছিলেন যে, সব কিছু করতে পারতেন। অনেকে বলে ছন্দ সম্পূর্ণ আলাদা। তবে এই ধরনের খেলোয়াড়, তিনি যদি এখন খেলতেন তাহলে এই ছন্দ ও গতির সঙ্গে ঠিকই মানিয়ে নিতে পারতেন। …তার যে দক্ষতা ও মানসিকতা ছিল তাতে তিনি প্রতিটি প্রজন্মেই খেলতে পারতেন।”

টটেনহ্যাম হটস্পার কোচ আন্তোনিও কন্তের কাছে পেলের জীবন মানে ফুটবলেরই গল্প।

“আমরা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজনকে নিয়ে কথা বলছি। আমরা ফুটবলের গল্প নিয়ে কথা বলছি।”

“তার ব্যবহার ছিল চমৎকার। (দিয়েগো) মারাদোনার সঙ্গে তিনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পরও তিনি ছিলেন নিরহংকার এবং সব সময় ছিলেন বিনয়ী।”

এভারটন ম্যানেজার ও সাবেক ইংলিশ মিডফিল্ডার ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের কাছে, পেলের প্রয়ান পৃথিবীর জন্য দুঃখের এক দিন।

“পেলের একমাত্র স্মৃতি কিশোর বয়সের ভিডিও ফুটেজ। পুরো বিশ্বের প্রেক্ষাপটে মারাদোনা ছিলেন আমার নায়ক। তবে এটা সব সময়ই স্বাভাবিক যে, মারাদোনা ও পেলে হলেন দুই সর্বশ্রেষ্ঠ। গতকাল যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এটাতেই পরিষ্কার, তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ এবং একই সঙ্গে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়।”