ম্যান সিটির সঙ্গে ড্রয়ের পর ক্ষুব্ধ ক্লপের দাবি, ‘শতভাগ পেনাল্টি ছিল’

ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে শেষ সময়ে পেনাল্টি না পেয়ে রেফারির দিকে আঙুল তুললেন লিভারপুলের কোচ, ‘লাঞ্চে কী খেয়েছে সে!”

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2024, 07:01 AM
Updated : 11 March 2024, 07:01 AM

সিদ্ধান্তটি নিয়ে মাঠেই বেশ বিস্মিত ও উত্তেজিত ছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ম্যাচ শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি মাইক্রোফোনের সামনে। লিভারপুল কোচের দাবি, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ড্র হওয়া ম্যাচের শেষ সময়ে নিশ্চিত একটি পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছে তার দল। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন ভিএআর অফিসিয়ালকে। 

অ্যানফিল্ডে রোববার ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ৮ মিনিট বাড়তি সময় দেওয়া হয়। সেই সময়টুকু পেরিয়ে ৯৯তম মিনিটে আলোচিত সেই ঘটনা। ম্যানচেস্টার সিটির বক্সে হেড করার চেষ্টা করছিলেন আলেক্সিস মাক আলিস্তের। তাকে আটকানোর চেষ্টায় তার বুকে লাগে সিটির জেরেমি ডোকুর বুট। 

লিভারপুলের ফুটবলাররা তখনই ফাউলের দাবি করেন। কিন্তু তাতে কান দেননি রেফারি। ভিএআর কর্মকর্তাও একমত ছিলেন মাঠের রেফারির সঙ্গে। রেফারিকে আহবান জানানো হয়নি দ্বিতীয়বার ভিডিও দেখে তা পরীক্ষা করতে। একটু পরই শেষ বাঁশি বাজে। শিরোপা লড়াইয়ের পথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। 

তবে শেষ সময়ের জয়ের সম্ভাব্য সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ক্লপ। লিভারপুল কোচের যাবতীয় ক্ষোভ ভিএআর কর্মকর্তার ওপর। 

“তার বুকে আঘাত করেছে… এর আগে কি সে বল স্পর্শ করেছে? হ্যাঁ। মাঠের যে কোনো পজিশনেই পা এতটা ওপরে উঠলে তা কি পার্থক্য গড়ে দেয়? কেউ বলে কিক করতে পারে, তার পর তার পা উঠে যায় এখানে (বুকের দিকে নির্দেশনা করে)… এবং এরপরও সে পার পেয়ে যায়।” 

“ভিএআর কক্ষে থাকা লোকটির কেন মনে হলো, এটা স্পষ্ট ও নিশ্চিত নয়? লাঞ্চে কী খেয়েছে সে! এটা শতভাগ পেনাল্টি ছিল। তারা (রেফারিরা) একটি ব্যাখ্যা অবশ্যই বের করবে। তবে মাঠের যে কোনো জায়গাতেই এটা শতভাগ ফাউল ছিল এবং সম্ভবত হলুদ কার্ডও ছিল প্রাপ্য।” 

এমন ক্ষোভ প্রকাশের পর সম্ভাব্য কী ঘটনা ঘটতে পারে, সেটিও জানা আছে ক্লপের। কিন্তু তাতে কোনো ফায়দা তিনি দেখেন না। 

“কেউ একজন হয়তো পরে আমাকে বোঝাবেন যে, কীভাবে এটা পেনাল্টি হয়নি, কিংবা হাওয়ার্ড ( প্রফেশনাল গেম ম্যাচ অফিসিয়ালস লিমিটেডের প্রধান হাওয়ার্ড ওয়েব) আমাকে কালকে ফোন করবে এবং বলবে যে, সে দুঃখিত। সম্ভাব্য দুটি ব্যাপার হতে পারে এরকমই এবং কোনোটিতেই আসলে ম্যাচের ফল বদলাবে না।” 

“আমার চারপাশে আইপ্যাড ছিল যাদের কাছে, সবাই বলেছে, ‘ওয়াহ, এটা পরিষ্কার (ফাউল)।’ হয়তো তারা ব্যাপারটি লুকিয়ে ফেলবে এটির আড়ালে যে ব্যাপারটি ‘স্পষ্ট ও নিশ্চিত’ ছিল না।” 

এখন যত কিছুই বলা বা করা হোক, ম্যাচের ফল যে বদলাবে না, সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন ক্লপ। তিনি বরং খুশি মাঠের ফুটবলে তার দল নিজেদেরকে দারুণভাবে মেলে ধরায়। প্রবল প্রতাপশালী ম্যানচেস্টার সিটিকে এতটা কোণঠাসা হতে আগে দেখেননি বলেই দাবি তার। 

“অবশ্যই এটি পরিষ্কার পেনাল্টি ছিল। আমরা এটা পাইনি, তাতে সমস্যা নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আমরা এই ধরনের ফুটবল খেলতে পারি। আজকে অসাধারণ সব পারফরম্যান্স দেখেছি আমি। দুর্দান্ত খেলেছে ছেলেরা। প্রথম ১০ মিনিটে আমরা একটু তাড়াহুড়ো করেছি। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যেভাবে খেলেছি, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে এতটা ভালো নিশ্চিতভাবেই আগে কখনও খেলিনি আমরা।” 

“ওরা একবার পোস্টে বল লাগিয়েছে বটে। তবে আমাদের আরও দুই-তিন গোল করা উচিত ছিল। দুর্দান্ত ম্যাচ খেলেছি আমরা। আমার মতে, প্রথমবার আমরা প্রমাণ করেছি যে, শতভাগ খেললে এই দল কেমন করতে পারে। সিটিকে এতটা ভুগতে আগে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। অসাধারণ ছিলাম আমরা। (লিগের) শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব আমরা এবং দেখব কোথায় থাকতে পারি।” 

এই ম্যাচ ড্র হওয়ার পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ তিন দলের মধ্যে ব্যবধান এখন কেবল এক পয়েন্ট। ২৮ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল, সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে পেছনে থেকে দুইয়ে লিভারপুল। ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ম্যানচেস্টার সিটি।