শেষ সময়ে রেয়ালের জালে বল, আতলেতিকোর ড্রয়ের উচ্ছ্বাস

চলতি মৌসুমে মুখোমুখি লড়াইয়ে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে একটু হলেও এগিয়ে রইল আতলেতিকো মাদ্রিদ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Feb 2024, 10:02 PM
Updated : 4 Feb 2024, 10:02 PM

নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে চলে যোগ করা সময়। সেখানেও বাকি আর ৯০ সেকেন্ডের মতো। সেই অন্তিম সময়ে রেয়াল মাদ্রিদকে হতভম্ব করে দিল আতলেতিকো মাদ্রিদ। জয়ের খুব কাছ থেকে মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারিয়ে ফেলল কার্লো আনচেলত্তির দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার রাতে লা লিগায় দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইটি শেষ হয়েছে ১-১ ড্রয়ে। ব্রাহিম দিয়াস রেয়ালকে এগিয়ে নেওয়ার পর শেষ সময়ে সমতা টানেন মার্কোস ইয়োরেন্তে।

মাদ্রিদের এই দুই দল চলতি মৌসুমে এর আগেও তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল। গত সেপ্টেম্বরে লা লিগায় প্রথম দেখায় প্রতিপক্ষের মাঠে ৩-১ গোলে হেরেছিল রেয়াল। এরপর জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমি-ফাইনালে ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ৫-৩ ব্যবধানে জেতে আনচেলত্তির দল। পরে তারা ওই ট্রফিটিও ঘরে তোলে।

সপ্তাহখানেক বাদে আবারও মুখোমুখি হয় তারা, কোপা দেল রের শেষ ষোলোয়। ওই ম্যাচও গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে; যেখানে ৪-২ গোলে হেরে বিদায় নেয় রেয়াল। এবার তাদের ছিল প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। ঘরের মাঠে সেই সম্ভাবনাও জাগায় দলটি, কিন্তু তীরের কাছে গিয়ে তরী ডুবল তাদের।

ম্যাচ শুরুর খানিক আগেই অনেক বড় ধাক্কা খায় রেয়াল। ওয়ার্ম-আপ করার সময় কাঁধে ব্যথা অনুভব করেন দলের সবচেয়ে গতিময় ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস জুনিয়র। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে বেঞ্চে রেখে খেলতে নামে দলটি।

তারপরও প্রথম পাঁচ মিনিটেই গোলের উদ্দেশ্যে তিনটি শট নেয় তারা, যদিও কোনোটিতেই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে তেমন কঠিন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। শুরু থেকে আতলেতিকোও তাদের চিরচেনা জমাট রক্ষণ গড়ে তোলে।

অবশ্য ২০তম মিনিটে তারা যে পিছিয়ে পড়ে, তাতে দলটির রক্ষণের দায়ও আছে যথেষ্ট। ডি-বক্সে দুইবার বল বিপদমুক্ত করার সুযোগ পেয়েও পারেনি তারা। দ্বিতীয় দফায় লুকাস ভাসকেস চেষ্টা করেন জুড বেলিংহ্যামকে খুঁজে নেওয়ার; কিন্তু প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে বল পেয়ে যান ব্রাহিম দিয়াস। ঠাণ্ডা মাথায় দুইজনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গোলরক্ষকের সামনে চিপ শটে বল জালে পাঠান ভিনিসিউসের জায়গায় খেলতে নামা দিয়াস।

পিছিয়ে পড়ার তিন মিনিট পরই প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ায় আতলেতিকো; তবে মিডফিল্ডার অ্যালেক্স উইটসেলের হেড লাফিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে এরপরেও; কিন্তু বিরতির আগে আর কোনো নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউ।

দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমানের কর্নারে দারুণ হেডে পেছনের পোস্ট দিয়ে জালে বল জড়ান স্তেফান সাভিচ। তবে উল্লাস থেমে যায় মুহূর্তেই; ভিএআরের সাহায্যে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি, অফসাইডে ছিলেন সাউল নিগেস।

৬১তম মিনিটে আতলেতিকো কোচ একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনেন। একটু একটু করে খেলার গতি বাড়তে থাকে। ভিনিসিউকেও দেখা যায় ওয়ার্ম-আপ করতে।

৬৬তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পেয়ে যায় রেয়াল। তবে রদ্রিগোর জোরাল শট রুখে দেন আতলেতিকো গোলরক্ষক। আট মিনিট পর গোল খেতে বসেছিল রেয়াল; তবে গ্রিজমানের ব্যকহিল পা দিয়ে রুখে দেন লুনিন।

সময় গড়াতে থাকে, আক্রমণও হতে থাকে; কিন্তু গোলের দেখা আর মেলে নো। রেয়াল শিবিরে পূর্ণ তিন পয়েন্ট পাওয়ার আশাও বাড়তে থাকে। কিন্তু চার মিনিট যোগ সময়ের তৃতীয় মিনিটে সব ওলটপালট; মেম্ফিস ডিপাইয়ের হেড পাস ডি-বক্সে পেয়ে হেডেই ক্রসবার ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ইয়োরেন্তে।

শুরু হয়ে যায় আতলেতিকোর বাঁধভাঙা উল্লাস, খানিক বাদেই শেষের বাঁশি এবং তাদের উদযাপন পায় নতুন মাত্রা। খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পয়েন্ট বের করে নেওয়ার উচ্ছ্বাস।

লিগ টেবিলে অবশ্য শীর্ষেই থাকছে রেয়াল মাদ্রিদ; ২৩ ম্যাচে ১৮ জয় ও চার ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৫৮। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে জিরোনা।

তৃতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৫০। তাদের চেয়ে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে চার নম্বরে আতলেতিকো।