‘গরিবের হলান্ড’ বিদ্রুপে এখন আর হয়রান নন হয়লুন

কিছুদিন আগেও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হচ্ছিলেন যিনি, সেই ফরোয়ার্ড এখন পারফর‌ম্যান্স দিয়েই আপন আলোয় উজ্জ্বল ম্যানচেস্টার ইউনাইডেটের জার্সি গায়ে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2024, 06:47 AM
Updated : 19 Feb 2024, 06:47 AM

খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, গাসমুস হয়লুন নামটি ছিল উপহাসের উপকরণ। তুমুল ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হতে হচ্ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তরুণ ফরোয়ার্ডকে। বিশেষ করে, নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির সমর্থকদের কাছে তার পরিচয় হয়ে গিয়েছিল ‘গরিবের হলান্ড।’ সেই আঁধার কাটিয়ে এখন আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়লুন। তাকে ঘিরেই নতুন দিনের স্বপ্ন বুনছে ইউনাইটেড। 

লুটন টাউনের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ২-১ গোলের জয়ে রোববার দুটি গোলই করেছেন হয়লুন। এই নিয়ে টানা ছয় ম্যাচে গোল করলেন তিনি। 

এই পরিক্রমায় একটি রেকর্ডেও নাম লেখা হয়ে যায় ডেনমার্কের ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে টানা ছয় ম্যাচে গোল করা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার তিনিই। 

গোলের রেকর্ড গড়লেন যিনি, কিছুদিন আগেও তিনি ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিলেন সমালোচনায়। ৭ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডে গত জুলাইয়ে তাকে দলে আনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তার কাছে প্রত্যাশাও ছিল তাই আকাশচুম্বি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের জার্সির যেমন ওজন আছে, তেমনি বড় অঙ্কের ট্রান্সফার ফির বাড়তি চাপও আছে। হয়লুন যেন সব মিলিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন। প্রথম গোলের দেখাই পাচ্ছিলেন না। 

দলও তখন চরম দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। আঙুল উঠছিল তার দিকেও। তাকে নিয়ে ছিল তুমুল চর্চা। আর্লিং হলান্ডের সঙ্গে তুলনাও চলে আসছিল। নরওয়ের ফরোয়ার্ডের বয়স তার মতোই। প্রথম মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে গোলের পর গোল করে রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। অথচ হয়লুন হয়রান ছিলেন প্রথম গোলের খোঁজে। প্রথমবার তার জালের দেখা পেতেই পেরিয়ে যায় বড়দিন।

এখন বদলে গেছে সেই চিত্র। হলান্ড এই মৌসুমেও যথেষ্ট উজ্জ্বল। চোটের কারণে অনেক দিন বাইরে থাকার পরও লিগের সবচেয়ে বেশি ১৬ গোল এখনও পর্যন্ত তার। তবে শনিবার চেলসির বিপক্ষে দলের ১-১ ড্রয়ে সহজ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। পরদিনই জোড়া গোল করে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নায়ক হয়লুন।

হয়লুনের টানা ব্যর্থতার সময়টায় তাকে দলে আনার কারণে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কোচ এরিক টেন হাগকেও। ইউনাইটেড কোচ এখন স্বস্তির ছোঁয়া পেলে বললেন, আরও অনেক গোল তিনি দেখতে পাচ্ছেন হয়লুনের পায়ে। 

“তাকে এই ক্লাবে আনার পেছনে একটা বড় কারণ ছিল তার মানসিকতা। আমি জানতাম, মানসিকভাবে সে খুব শক্ত। সে প্রবল চাপের মধ্যে পারফর্ম করতে পারে এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার হতে হলে এই শক্তিটা থাকতে হয়।” 

“সে সহজে নার্ভাস হয় না, আত্মবিশ্বাস হারায় না। সবসময়ই নিজের ওপর ওর বিশ্বাস প্রবল এবং আমি নিশ্চিত, সে আরও অনেক গোল করবে।”

দুঃসময়ে নিজের ওপর বিশ্বাস হারাননি হয়লুন নিজেও। তবে একটু অস্থির হয়ে উঠছিলেন তিনি। সেই সময়টায় পাশে থাকার জন্য তরুণ এই ফুটবলার ধন্যবাদ জানালেন সংশ্লিষ্টদের। 

“আমিও জানতাম, একসময় না একসময় গোল করবই, কিন্তু অবশ্যই ওই সময়টায় গোল করতে না পেরে বেশ দুর্ভাবনায় পড়েছিলাম।” 

“আমার মনে হয়, এই সুযোগে সতীর্থদের ও কোচের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত আমার। তারা আমার ওপর দারুণ আস্থা রেখেছে এবং বরাবরই আমাকে বিশ্বাস জুগিয়ে গেছে।”