ফেডারেশন কাপের মুকুট পুনরুদ্ধার আবাহনীর

শুরুর দিকে আবাহনীকে চেপে ধরল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। কিন্তু ফেডারেশন কাপের রেকর্ড শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ আকাশী-নীলরা গুছিয়ে উঠল একটু একটু করে। মাঝপথে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও পেয়ে যায় তারা। ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া রহমতগঞ্জের বিপক্ষে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে মুকুট পুনরুদ্ধার করল মারিও লেমোসের দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2022, 01:24 PM
Updated : 9 Jan 2022, 03:15 PM

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রোববার ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে আবাহনী। দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরার গোলে তারা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান রাকিব হোসেন। রহমতগঞ্জের একমাত্র গোলটি করেন ফিলিপ আজাহ।

দুই মৌসুম পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা ফিরে পেল ঘরোয়া ফুটবলের ঐতিহ্যবাহী দলটি। ১১টি শিরোপা নিয়ে আগে থেকেই প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। রেকর্ডটাকে আরেকটু উঁচুতে তুলল লেমোসের দল।

২০১৯-২০ মৌসুমের কোয়ার্টার-ফাইনালে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে হেরে যাওয়ার মধুর প্রতিশোধও নিল তারা।

মৌসুমে টানা দুটি শিরোপা জিতল আবাহনী। বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপ জিতে মৌসুম শুরু করেছিল তারা।

চোটের কারণে দুই ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল অগাস্তো সান্তোস দি সিলভা ও দোরিয়েলতন গোমেস রদ্রিগেসের অনুপস্থিতি প্রথম দিনে বেশ ভোগাল আবাহনীকে। শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবলের পসরা মেলল রহমতগঞ্জ।

দ্বাদশ মিনিটে প্রথম ভালো আক্রমণে ওঠে রহমতগঞ্জ। খন্দকার আশরাফুল ইসলামের বাড়ানো পাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সানডে চিজোবাকে আটকাতে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। একটু তাড়াহুড়ো করে নেওয়া নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ডের শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

দুই মিনিট পর আবারও সুযোগ আসে ২০১৯-২০ মৌসুমের রানার্সআপদের সামনে। নিজেদের অর্ধ থেকে চিজোবার রক্ষণচেরা পাস অফসাইড ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ফিলিপ আজাহ। ঘানার এই ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শট পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আটকান সেমি-ফাইনালে টাইব্রেকারে আবাহনীর জয়ের নায়ক শহিদুল।

আবাহনী প্রথম ভালো আক্রমণ শানায় ২৮তম মিনিটে। বক্সের ভেতর থেকে জুয়েল রানার হেড পাস খুঁজে নেয় ছোট ডি-বক্সের ডান দিকে অরক্ষিত নাবীব নেওয়াজ জীবনকে। কিন্তু গোলরক্ষক রাকিবুল হাসান তুষারকে একা পেয়েও জীবন ক্রসবার উড়িয়ে মারেন। সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় দলের বাকিদেরও টার্ফে মাথা ঠুকতে দেখা যায়।

৩৫তম মিনিটে রহমতগঞ্জ অধিনায়ক মাহমুদুল হাসান কিরণের কর্নারে এনামুল ইসলাম গাজীর ব্যাক হেড দুরের পোস্টের খানিকটা উপর দিয়ে চলে যায়। ৪৫তম মিনিটে আরেকটি ভালো সুযোগ নষ্ট করেন চিজোবা। দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে বক্সের সামনে থেকে তার জোরাল শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবাহনী এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে মাতে কলিনদ্রেসের গোলে। ম্যাচের দৃশ্যপটও বদলাতে থাকে এরপর থেকে। রাকিব হোসেনের পাস ধরে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে কাছের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন কোস্টারিকার এই ফরোয়ার্ড। ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনীর খেলায় গতি বাড়ে। ৪৯তম মিনিটে বক্সের কোণা থেকে কলিনদ্রেসের কোনাকুনি ভলি দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। দুই মিনিট পর এই ফরোয়ার্ডের আরেকটি শট অল্পের জন্য উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

৬৪তম মিনিটে পায়ের কারিকুরিতে এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দূরপাল্লার শট নেন নুরুল নাইম ফয়সাল। তুষার ফিস্ট করে ফেরানোর পর বল বক্সেই পেয়ে যান রাকিব। দুই টোকায় একটু এগিয়ে নিখুঁত শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই ফরোয়ার্ড।

ছয় মিনিট পর ঘুরে দাঁড়ায় রহমতগঞ্জ। শাহরিয়ার বাপ্পীর দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বাড়ানো থ্রু পাস ধরে ডিফেন্ডার মামুন মিয়াকে কাটানোর পর ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষক শহিদুলের বাধা পেরিয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন আজাহ।

বাকি সময়ে আবাহনী বল পায়ে রাখার দিকে মনোযোগী ছিল বেশি। রহমতগঞ্জও পায়নি মরিয়া হয়ে ওঠার সুযোগ। তাতে দলটির একটি শিরোপার আপেক্ষা বাড়ল আরও।