দিকহারা বার্সেলোনাকে হারিয়ে দিল বেতিস

প্রথম ভাগের ছন্নছাড়া বার্সেলোনা দ্বিতীয়ার্ধের মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও নিজেদের কিছুটা খুঁজে পেল। বেশ কয়েকটি আক্রমণও করল তারা; তবে ফিনিশিংয়ে দুর্বলতাকে পেছনে ফেলতে পারলেন না মেমফিস-দেম্বেলেরা। উল্টো পাল্টা আক্রমণে তাদের স্তম্ভিত করে জয় ছিনিয়ে নিল রিয়াল বেতিস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2021, 05:14 PM
Updated : 9 Dec 2021, 03:25 PM

কাম্প নউয়ে শনিবার লা লিগার ম্যাচে স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়েছে বেতিস। শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দেন হুয়ানমি।

কোচ শাভি এরনান্দেস দায়িত্ব নেওয়ার পর লিগে টানা দুই জয়ে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছিল মৌসুমের শুরু থেকে ভুগতে থাকা বার্সেলোনা। কিন্তু ঘরের মাঠে এমন সাদামাটা পারফরম্যান্স হতাশাই বাড়াচ্ছে কেবল।

ম্যাচ শুরু হতেই বিপদে পড়তে পারত বার্সেলোনা। তবে সতীর্থের লম্বা ক্রসে হুয়ানমি গোলরক্ষক বরাবর হেড করেন। একাদশ মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে স্বাগতিকরা। জর্দি আলবার ক্রসে ফিলিপে কৌতিনিয়োর ফ্লিক ঠেকিয়ে দেন বেতিস গোলরক্ষক।

প্রথমার্ধে বার্সেলোনার বলার মতো সুযোগ ছিল ওই একটিই। ছন্দ খুঁজে ফেরা দলটি ৩৩তম মিনিটে খায় চোট ধাক্কা। প্রতিপক্ষের জোরালো শটে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠে কিছুক্ষণ পড়ে থাকেন তরুণ মিডফিল্ডার গাভি। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার বদলি নামেন আরেক তরুণ মিডফিল্ডার রিকি পুস।

প্রতিপক্ষের দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারেনি বেতিসও। ৪৫তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ নষ্ট করে তারা। সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আইতর রুইবাল।

প্রথম ৪৫ মিনিটে মাত্র দুই শটের একটি লক্ষ্যে রাখতে পারা বার্সেলোনার ওপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও চাপ ধরে রাখে বেতিস। ৫২তম মিনিটে তাদের জালে বলও পাঠান রুইবাল, তবে অফসাইডে ছিলেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।

আক্রমণে ধার বাড়াতে ৫৮তম মিনিটে জোড়া পরিবর্তন আনে বার্সেলোনা। কৌতিনিয়োকে বসিয়ে উসমান দেম্বেলে ও নিকো গনসালেসের জায়গায় ফ্রেংকি ডি ইয়ংকে নামান কোচ। এতে তাদের আক্রমণে বেশ গতি বাড়ে।

পরের ২০ মিনিটে টানা আক্রমণ করে বার্সেলোনা। কয়েকটি হাফ-চান্সও তৈরি করে তারা, যদিও নিশ্চিত সুযোগ মিলছিল না। ৭৭তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় আশা জাগালেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে শেষ পর্যন্ত হতাশই করেন দেম্বেলে।

মাঝের এই সময়ে রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত বেতিস ৭৯তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায়। সতীর্থের পাস পেয়ে ক্রিস্তিয়ান তেইয়ো বল বাড়ান ডি-বক্সে ফাঁকায় থাকা হুয়ানমিকে। ডান পায়ের শটে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটা গোল খেয়ে যেন আবারও হারিয়ে ফেলে বার্সেলোনা। বাকি সময়ে তেমন কিছুই আর করতে পারেনি দলটি।

দারুণ এই জয়ে আপাত লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠেছে বেতিস। ১৬ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩০।

এক ম্যাচ কম খেলা বার্সেলোনার লিগে এটি চতুর্থ হার। ছয় জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে আছে তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে বার্সেলোনার পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না মোটেও; তবে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গত ৬ ম্যাচে অপরাজিত ছিল তারা। কিন্তু এবার হেরেই গেল দলটি।

আগামী বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গ্রুপ পর্বে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে কাতালান ক্লাবটি। ওই ম্যাচে হারলেই ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে ছিটকে যেতে পারে তারা। বাঁচা-মরার ম্যাচটির আগে ঘরের মাঠে এই হার দলটির আত্মবিশ্বাসে জোর ধাক্কাই বটে।