ড্রয়ে শেষ লিভারপুল-সিটির রোমাঞ্চকর লড়াই

প্রথমার্ধে সুযোগ নষ্টের মহড়ায় মাতল ম্যানচেস্টার সিটি। এই সময়ের বিবর্ণ লিভারপুল বিরতির পর পুরোপুরি বদলে গেল। দুইবার এগিয়েও গেল তারা। প্রতিবারই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল পেপ গুয়ার্দিওলার দল। রোমাঞ্চ, উত্তেজনার ভেলায় ভেসে ড্রয়ে শেষ হলো দুই দলের লড়াই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2021, 05:32 PM
Updated : 3 Oct 2021, 06:44 PM

অ্যানফিল্ডে রোববার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। সবগুলো গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে।

লিভারপুলের হয়ে একটি করে গোল করেন মোহামেদ সালাহ ও সাদিও মানে। ম্যানচেস্টার সিটির দুই গোলদাতা ফিল ফোডেন ও কেভিন ডে ব্রুইনে। 

পুরো ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকা সিটি গোলের উদ্দেশ্যে শট নেয় ১২টি, যার তিনটি লক্ষ্যে। লিভারপুলের ছয় শটের চারটি লক্ষ্যে ছিল।

লিগে টানা দুই ম্যাচে পয়েন্ট হারাল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। গত রাউন্ডে নবাগত ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল তারা।

শুরু থেকে বলের দখলে দুই দল প্রায় সমানে-সমান থাকলেও পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউই। ১৯তম মিনিটে আলিসনের ভুলে বিপদে পড়তে বসেছিল লিভারপুল। ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক বল তুলে দেন বের্নার্দো সিলভার পায়ে। এই মিডফিল্ডারের পাসে গাব্রিয়েল জেসুসের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ডিফেন্ডার জোয়েল মাতিপ।

দুই মিনিট পর কয়েক জন ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে ডি-বক্সে দারুণ থ্রু বল বাড়ান সিলভা। ফিল ফোডেনের শট এগিয়ে এসে রুখে দেন আলিসন। ৩৪তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পান কেভিন ডে ব্রুইনে। ফোডেনের ক্রস দূরের পোস্টে পেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে হেড নেন অরক্ষিত বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।

বিরতির আগে লম্বা করে দারুণ একটি বল বাড়ান সিটির গোলরক্ষক এদেরসন। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ফোডেন। এবারও এগিয়ে এসে তাকে রুখে দেন আলিসন।

প্রথমার্ধে গোলের উদ্দেশে সিটির সাত শটের একটি লক্ষ্যে ছিল। আর লিভারপুল শটই নিতে পারে স্রেফ একটি। এই সময়ে পুরো নিষ্প্রভ ছিলেন তাদের আক্রমণভাগের তিন সেনানী সালাহ, মানে ও দিয়োগো জটা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আলো ছড়ায় লিভারপুল। ৫০তম মিনিটে মাতিপ দারুণভাবে ডি-বক্সের সামনে বল বাড়ান জটাকে। শরীর ঘুরিয়ে শট নেন তিনি, তবে ঝাঁপিয়ে ঠেকান এদেরসন।

দারুণ এক আক্রমণ থেকে ৫৯তম মিনিটে এগিয়ে যায় ক্লপের দল। সালাহ মাঝমাঠে বল পেয়ে এগিয়ে জোয়াও কানসেলোর বাধা এড়িয়ে পাস দেন ডি-বক্সে। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে এগিয়ে আসা এদেরসনকে ফাঁকি দেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড মানে।       

তাদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭০তম মিনিটে সমতা ফেরায় সিটি। ডান দিক দিয়ে তিন জনের মাঝ দিয়ে এগিয়ে ডি-বক্সে থ্রু বল বাড়ান জেসুস। বাঁ পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ফোডেন।

৭৬তম মিনিটে সালাহর চমৎকার গোলে আবার এগিয়ে যায় লিভারপুল। ডি-বক্সে দুই ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে মিসরের এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট দূরের পোস্টে ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়।

গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির বিপক্ষে ২-০ গোলে হারা সিটি আবার সমতা ফেরায় ৮১তম মিনিটে। ডি-বক্সে বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় লিভারপুলের খেলোয়াড়রা। ডে ব্রুইনের বাঁ পায়ের জোরালো শট মাতিপের গায়ে লেগে জালে জড়ায়। বাকি সময়ের লড়াই জমজমাট থাকলেও আর গোলের দেখা মেলেনি।  

এই ম্যাচ জিতে লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ওঠার সুযোগ ছিল দুই দলের সামনেই। কেউ তা কাজে লাগাতে পারল না।

সাত ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে চেলসি। এক পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে লিভারপুল। ১৪ পয়েন্ট করে নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি তিনে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড চারে ও এভারটন পাঁচে আছে।